চিত্তরঞ্জন শহরের দখলদারি কার্যত চলে এলো কংগ্রেস পরিচালিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র হাতে। রবিবার ৪৫টি স্ট্রিট মেম্বার আসনের নির্বাচনে তারা জয় পেয়েছে ২৮টিতে। এর অর্ধেক আসনে জিতেছে সিটু। বাকি ৩টি আসনে জয় পেয়েছেন তফশিলি জাতী, উপজাতি সংগঠনের ২ প্রতিনিধি ও রেলের এক আধিকারিক।
নির্বাচনে খাতা খুলতে পারেনি ভারতীয় রেল মজদুর সঙ্ঘ অনুমোদিত কর্মচারী সঙ্ঘ। আগামী ১৭ তারিখ এরিয়া ভিত্তিক ভাইস ওয়ার্ডেন নির্বাচন। নির্বাচিত স্ট্রিট মেম্বাররাই ভাইস নির্বাচন পদে ভোট দেবেন। তবে স্ট্রিট মেম্বার পদে যেহেতু আইএনটিইউসি অনেক এগিয়ে, তাই ভাইস ওয়ার্ডেন পদে বাড়তি সুবিধা পাবে তারাই।
রবিবার, রেল শহরের ৪৫টি আসনে ১২০ জন প্রার্থীকে ভোট দেন ৭৬৬৯ জন ভোটার। এদিন সকালের দিকে ভোটকেন্দ্রে তেমন উৎসাহ না থাকলেও বেলা ১১টার পর থেকে ভোটারের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তবে গরমের কারণে ভোট দেননি প্রায় ২০ শতাংশ ভোটার। ভোটে আইএনটিইউসি ৪৫টি এবং সিটু ৪১টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে মোতায়েন করা হয় আরপিএফ ও রাজ্য পুলিশের বিশাল বাহিনী।
শহরের ৮টি এরিয়ার মধ্যে আইএনটিইউসি জিতেছে ১, ২, ৩, ৫, ৭ ও ৮ নম্বরে। অন্য দিকে, সিটু জয় পেয়েছে ৪ ও ৬ নম্বর এরিয়ায়। ১ নম্বরের ফতেপুর ও ৩ নম্বরের হিল কলোনি হাতছাড়া হয়েছে সিটুর। এবার এই দু’টি আসনে আইএনটিইউসি ঝড়ে কার্যত উড়ে গিয়েছে তারা। তবে জিতলেও উচ্ছ্বাস চেপে রেখে আইএনটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ সিং বলেন, ‘এই জয় চিত্তরঞ্জনের মানুষের জয়।
৬টি এরিয়ায় জিতে এখানকার মানুষের সব দাবিদাওয়া, নাগরিক পরিষেবা মেটানোর চেষ্টা করব।’ ইন্দ্রজিৎ জানিয়েছেন, জয়ের পর শহরের কোথাও মিছিল করবেন না তাঁরা। বলেন, ‘আমাদের জয়ী সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা নিজেদের এলাকায় গিয়ে মানুষকে ধন্যবাদ দিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেবেন।’ ফলাফল কিছুটা হতাশ করলেও কারখানা বাঁচানোর আন্দোলন তাঁরা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন সিটুর সাধারণ সম্পাদক রাজীব গুপ্ত।
বলেন, ‘আগামী দিনে কারখানা বাঁচানোর লড়াইয়ে আমাদের অন্যতম অংশীদার হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্য আমরা চিত্তরঞ্জনের মানুষকে ধন্যবাদ দেব। এরিয়া ফোর এবং এরিয়া সিক্সে আমরা আমাদের প্রভাব ধরে রাখতে পেরেছি। এখানে মানুষ আমাদের সমর্থন জানিয়েছেন। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে চিত্তরঞ্জনকে মিনি ভারতবর্ষ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের সংগ্রাম চলবে।’
এবার নির্বাচনে খাতাই খুলতে পারেনি ভারতীয় রেল মজদুর সঙ্ঘ অনুমোদিত কর্মচারী সঙ্ঘ। সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি ও চিত্তরঞ্জনের কর্মী, কৃষ্ণ মুরারি পান্ডে বলেন, ‘এখানে সংগঠনে আমাদের অনেকে সদ্য দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁরা বিষয়টি হয়তো ঠিকমতো বুঝে উঠতে পারেননি। আমরাও বাইরে থাকায় সময় দিতে পারিনি। এই ফলাফল নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করব।’