রবিবার অসহায় বাবা অসীম দেবশর্মাকে দেখেছিল গোটা রাজ্য। ব্যাগে করে মৃত পাঁচ মাসের সন্তানের দেহ নিয়ে শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে কালিয়াগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেন অসহায় বাবা। মাস কয়েকের যমজ সন্তানদের চিকিৎসা করাতে গিয়য়ে তিনি প্রায় নিঃস্ব হয়ে যান পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক অসীম।
কালিয়াগঞ্জের মুস্তাফানগর এলাকার বাসিন্দা অসীমের কয়েকদিন আগেই যমজ সন্তান হয়। দুই পুত্র সন্তানই সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁদের রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। বৃহস্পতিবার যমজ সন্তাদের একজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও অপর অসুস্থ শিশুকে চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শনিবার রাতেই সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার পর সোমবার অসীমের মুস্তাফানগরের বাড়িতে যান তৃণমূল ও বিজেপির প্রতিনিধি দল। দুই রাজনৈতিক দলের তরফেই সবরকমভাবে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।। যদিও এখনও সন্তানের মৃত্যু শোক এখনও কাটিয়ে উঠে পারেননি বাবা অসীম।
অসীম এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘ছেলেকে শিলিগুড়ির হাসপাতালে ভর্তি ছিল। সেখানে সে মারা যায়। চিকিৎসের পরামর্শে আমি ১০২ অ্যাম্বুল্যান্স সার্ভিসে ফোন করি। সেখান থেকে সব তথ্য নেওয়া হয়। কিন্ত জানানো হয়, যে মৃত রোগীকে নিয়ে যাওয়া যাবে না। এরপরই বাইরে অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে কথা বলি, তাঁরা আমরা থেকে আট হাজার টাকা চেয়েছিল। অত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা আমার ছিল না। রাত হয়ে গিয়েছিল। আমি বলেছিলামা ২-৩ হাজারের বেশি টাকা দিতে পারব না। ওঁরা রাজি হয়নি। পরের দিন সকালে ১৭০ টাকা দিয়ে ব্যাগ কিনি। সেই ব্যাগে করে নিয়ে এসেছি। কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছিল।’