ভরা বর্ষায় কি রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট? বর্ষা তো গেল, বন্যা পরিস্থিতিতে কি আদৌ ভোট সম্ভব? এখন এই প্রশ্নগুলিই ঘুরপাক খাচ্ছে জেলা প্রশাসনের অন্দরে। কারণ, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্য সমাবেশ থেকেই বলেছিলেন, ‘নব জোয়ার কর্মসূচির পরেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট।’ সেই হিসেবে রাজ্যে জুনের একদম শেষ অথবা জুলাই মাস ছাড়া পঞ্চায়েত ভোট সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে ভিলেন বর্ষা। তারপরেও কি ভোটের কথা ভাবছে রাজ্য সরকার কিংবা রাজ্য নির্বাচন কমিশন? প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শাসক থেকে বিরোধী দলের নেতাদের মনেও।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নব জোয়ার কর্মসূচি শেষ হচ্ছে আগামী ২৫ জুন। ভোটের দিনক্ষণ যদি তারপরে ঘোষণা হয়, সেক্ষেত্রে জুলাইতেই দিনক্ষণ ফেলার সম্ভবনা প্রবল। তবে ভাবাচ্ছে আরও একটি বিষয়, রাজ্যে সাধারণত পঞ্চায়েত ভোট হয়ে থাকে মে মাসে। জুন-জুলাই মাস সাধারণত ভারী বর্ষার সময়। ফলে সেই সময় ভোটের দিন ঠিক করা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কতটা ঠিক হবে, তা নিয়ে নানা মহলে নানা প্রশ্ন ওঠে এসেছে। যদিও প্রশাসনের একাংশ বলছেন, ‘ সমস্যা কোথায়?’ আরেকপক্ষের মতে, দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় টানা ২ দিনের বর্ষাতেও জল জমে যায়। ফলে ভোটারদের সমস্যা হতে পারে।
তবে এরপরে ভোট আরও অসম্ভব বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। কারণ, আগস্ট বা সেপ্টেম্বর-অক্টেবরে উত্তরবঙ্গ হোক বা দক্ষিণবঙ্গ অনেক জায়গাতেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। ফলে সেই সময় ভোট কোনওভাবেই সম্ভব নয়। সেই প্রসঙ্গ তুলেই নবান্নের এক কর্তা বলছিলেন, ‘ভোট জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই করে ফেলতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেটার সম্ভবনাই প্রবল।’
উল্লেখ্য, বর্তমান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের কার্যকালের মেয়াদ এই মাসেই শেষ হচ্ছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তিনি পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা করবেন না। পরের যিনি কমিশনার আসবেন তিনিই পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা করবেন।
এদিকে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ভোট কর্মী বাছাইয়ের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। একাধিক জেলায় কাজ শেষ হয়েছে। তবে অ্যাপয়নমেন্ট ছাড়াও শুরু হয়নি। এরপর ট্রেনিং-টিম ফরমেশন-দ্বিতীয়বারের ট্রেনিং রয়েছে। জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিকরা বলছেন, ‘নতুন করে আরও কোন নির্দেশ আসেনি। ফলে পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে কিছু এগোয়নি ধরে নেওয়া যায়।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘গত ৩০ বছর ধরে রাজ্যে বর্ষা প্রবেশের সময় হচ্ছে জুন মাস।’ ফলে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন ভরা বর্ষাতেই কি রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট?
এই সময় ডিজিটালের পক্ষ থেকে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘অভিষেকের বক্তব্যের কিছুটা ভুল ব্যাখা হচ্ছে। তবে বর্ষাকালে ভোট হবে না, এমন কোনও আইনি বাধা নেই।’