উল্লেখ্য, অনেকেরই হয়ত মনে আছে, কিছুদিন আগে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়ার টাকা না থাকায় মৃত স্ত্রীর দেহ কাঁধে নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটা দেওয়া জলপাইগুড়ির সেই জয়কৃষ্ণ দেওয়ানের কথা। সেদিন অসহায় দেওয়ান পরিবারকে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দিয়ে সাহায্য করে হাজতবাস করেছিলেন জলপাইগুড়ির এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অঙ্কুর দাস।
সেই ঘটনার পর আবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এবার উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ শিশু পুত্রের মৃত্যুর পর টাকার অভাবে অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে জামাকাপড়ের ব্যাগে সন্তানের মৃতদেহ ভরে বাড়ি নিয়ে আসেন কালিয়াগঞ্জের মুস্তাফানগরের বাসিন্দা অসীম দেবশর্মা।
টিভির পর্দায় মর্মান্তিক ও অমানবিক এই ঘটনা দেখতে পেয়ে শোর্কাত পরিবারকে সমবেদনা জানাতে মঙ্গলবার কালিয়াগঞ্জে অসীম দেবশর্মার বাড়িতে ছুটে এলেন জয়কৃষ্ণ দেওয়ান ও অঙ্কুর দাস। ছেলে হারানোর যন্ত্রণায় শোকার্ত অসীম দেবশর্মা ও তার স্ত্রীকে সমবেদনা জানান তাঁরা। পাশাপাশি তাঁর কাছে সমস্ত ঘটনা শোনেন দুজনে।
অঙ্কুর দাস বলেন, “এর থেকে খারাপ ঘটনা আর হয় না যেখানে একজন বাবাকে তাঁর সন্তানের মরদেহ ব্যাগে করে ভরে বাড়িতে আনতে হচ্ছে। অত্যন্ত মর্মান্তিক দৃশ্য।
এই বিষয়ে আমি রাজ্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর দিকে নজর দেওয়া হোক।”
জয়কৃষ্ণ দেওয়ান বলেন, “খবরটা পেয়ে না এসে থাকতে পারলাম না। কারণ এরকম ঘটনার মধ্যে দিয়ে আমাদের পরিবারও গিয়েছে। তাই মানবিকতার খাতিরে এই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এসেছি।”
এদিকে এই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। কালিয়াগঞ্জ ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাড়ি পাঠিয়ে অসীম দেবশর্মা সহ পরিবারের লোকেদের নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ভুক্ত করা হয়। এই বিষয়ে রায়গঞ্জের মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতি ফোনে জানিয়েছেন, “এদিন ওই পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ডেকে আনা হয়েছিল। পরবর্তীকালে তাদের জব কার্ডও করে দেওয়া হবে।”