এই ঘটনার কথা জানাজানি হতে অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য ভবনের তরফে রায়গঞ্জের সিএমওএইচের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়। এই ঘটনার পিছনে কাদের গাফিলতি রয়েছে, তা খতিয়ে দেখের ব্যবস্থা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
কালিয়াগঞ্জের ঘটনা নিয়ে সোমবারের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা জানিয়ে দেন, রাজ্য অ্যাম্বুল্যান্সের কোনও ঘাটতি নেই, স্থানীয় স্তরে ঘাটতি থাকলেও থাকতে পারে। ঘটনার সময় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হয়তো কোনও অ্যাম্বুল্যান্স ছিল না, সেই কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বলেন, ‘ছোটো শিশুকে সাধারণত কোলে করেই হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। সেক্ষেত্রে অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করা হয় না। রাজ্যে অ্যাম্বুল্যান্সের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। যদিও কোথাও কোনও ঘাটতি থাকে, তবে আমি বিষয়টি দেখে নেওয়ার জন্য বলব।’
কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক অসীম দেবশর্মার পাঁচ মাস আগে যমজ পুত্র সন্তান হয়। সম্প্রতি তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। একজন শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেকজনের মৃত্যু হয়। তাঁর দেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসতে গেলে অ্যাম্বুল্যান্স আট হাজার টাকা ভাড়া দাবি করে। সেই ভাড়া দিতে অপারগ অসীম ব্যাগে শিশুর দেহ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।
টোটো বাসে চেপে মৃত শিশুর দেহ নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় গোটা ঘটনার কথা সামনে আসে। এই ঘটনা রাজ্যের বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবাকেই তুলে ধরেছে বলে দাবি করেন বিরোধীরা। অন্যদিকে শাসকদলের দাবি, মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। নবান্নের তদন্তে কী উঠে আসে, সেটাই দেখার।