জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ২০১৬ সালে তিন ফরম্যাটে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কে এল রাহুলের (KL Rahul) আবির্ভাব ঘটেছিল। জাতীয় দলে তাঁর প্রথম অধিনায়ক ছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি (Mahendra Singh Dhoni)। এরপর বিরাট কোহলির (Virat Kohli) নেতৃত্বে খেলেছেন এই ওপেনার। এবং বর্তমানে রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) অধিনায়কত্বে খেলছেন টিম ইন্ডিয়ার (Team India) এই ওপেনার। একটি পডকাস্ট অনুষ্ঠানে এসে ‘মেন ইন ব্লু’ ব্রিগেডের তিন অধিনায়কের দক্ষতা নিয়ে মন্তব্য করলেন কে এল রাহুল (KL Rahul)। জি ২৪ ঘণ্টার পাঠকদের জন্য সেটা তুলে ধরা হল।
ধোনির নেতৃত্বে খেলার অভিজ্ঞতা: আমার ভাগ্য খুব ভালো। তিনজন দারুণ অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলার সুযোগ পেয়েছি। এবং আমার যাত্রা মাহি ভাইয়ের অধিনায়কত্বে শুরু হয়েছিল। ধোনি আমার ক্যাপ্টেন। আমার প্রথম অধিনায়ক। প্রবল চাপের মধ্যেও মাথা ঠাণ্ডা রেখে নেতৃত্ব দিয়েছে। সেগুলো খুব কাছ থেকে দেখেছি। এবং শেখার চেষ্টা করেছি। একজন অধিনায়ককে সফল হতে গেলে শুধু মাঠ নয়, মাঠের বাইরেও সতীর্থদের বিশ্বাস অর্জন করতে হয়। প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদাভাবে সম্পর্ক তৈরি করতে হয়। যাতে দলের সবাই বাইশ গজের যুদ্ধে নিজেদের উজাড় করে দিতে পারে। একজোট হয়ে সবাই লড়াই করতে পারে। এগুলোই ওঁর কাছ থেকে বছরের পর বছর ধরে শিখেছি।
বিরাটের নেতৃত্ব মানেই আগ্রাসন: প্রায় ছয়-সাত বছর বিরাটের অধীনে ভারতীয় দলে খেলেছি। ওর অধিনায়কত্বের মধ্যে প্যাশন রয়েছে। তেমনই রয়েছে আগ্রাসী মনোভাব। সেই আগ্রাসন বাকিদের মধ্যেও ছড়িয়ে যেতে দেখেছি। আর তাই বিরাটের নেতৃত্বে বিদেশে আমরা টেস্ট ক্রিকেটে এত ভালো ফল করেছিলাম। কারণ বিরাট যেমন সতীর্থদের কাছ থেকে তাদের সেরা পারফরম্যান্স আদায় করতে পারে, তেমনই একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা দেখিয়েছিল। তাই নিজের দলের ক্রিকেটার ছাড়া বিপক্ষ দলগুলোর কাছে বিরাট নেতা হিসেবে সমীহ আদায় করে নিয়েছিল। এছাড়া বিরাটের অধিনায়কত্বে আমাদের ফিটনেসেও প্রবল উন্নতি ঘটেছিল। ও নিজেকে ফিট রাখতে ভালোবাসে। দেশের জার্সি গায়ে চাপিয়ে সর্বস্ব উজাড় করে দেওয়ার জন্য বিরাট ফিটনেস ও ডায়েটকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল। আর তাই নেতা হিসেবে বিরাট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত সফল হয়েছে।
আরও পড়ুন: KL Rahul: অবশেষে অভিমানে মুখ খুললেন আউট হয়ে বারবার ট্রোলিং হওয়া কে এল রাহুল
অধিনায়ক রোহিতের বিশেষত্ব: অধিনায়ক হিসেবে রোহিত খুবই তীক্ষ্ণ। কীভাবে একটা ম্যাচের রাশ নিজের দখলে রাখতে হয়, কোন পরিকল্পনায় বিপক্ষকে উড়িয়ে দিতে হয়, সেটা রোহিত খুব ভালোভাবে জানেন। আন্তর্জাতিক ম্যাচ হোক কিংবা আইপিএল, রোহিত প্রতিটি ম্যাচে নামার আগে সতীর্থদের সঙ্গে আলোচনা করে। ড্রেসিংরুমে বসে বিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতা নিয়ে কাঁটাচেরা করে। আর বিপক্ষের সেরা ক্রিকেটারদের শক্তি জানার সঙ্গে, রোহিত ওদের দুর্বলতাও খুব ভালোভাবে জানে। আর তাই বিপক্ষের ক্রিকেটারদের খুব সহজেই চাপে ফেলে দেয় রোহিত। একইসঙ্গে ওর ম্যাচ রিডিং খুব ভালো।
কে এল রাহুল তাঁর তিন অধিনায়কের ভালো-মন্দ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করলেন। তবে নিজে কিন্তু নেতা হিসেবে তেমন সাফল্য পাননি। টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়কত্ব থেকে আইপিএল-এর মঞ্চ, সব ফরম্যাটেই অধিনায়ক হিসেবে হতাশ করেছেন এই তারকা ব্যাটার। গত বছর রোহিতের অবর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রোটিয়াসদের বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। সেই সিরিজে ভারতীয় দল ০-৩ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল। এমনকি পঞ্জাব কিংসের পর রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টের অধিনায়ক হিসেবেও তেমন দাগ কাটতে পারেননি তিনি।