পূর্ব বর্ধমানের মেমারির দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে দেখা গেল এমন দৃশ্য। আনুমানিক প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে বিধায়ক তহবিল থেকে ১০ বছর আগে কেনা অ্যাম্বুল্যান্স শুধুমাত্র ‘তিনি পছন্দের পাত্র নন’, তাই ১ কিলোমিটারও চালানো হয়নি বলে অভিযোগ মেমারির প্রাক্তন বিধায়ক আবুল হাসেম মণ্ডলের।
সরকারি সম্পত্তি এইভাবে নষ্টের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন তিনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠছে তখন সরকারি টাকায় কেনা অ্যাম্বুল্যান্স পড়ে পড়ে নষ্ট হওয়ার ঘটনায় সরব হয়েছেন স্থানীয়রাও।
স্থানীয় এক মানুষ দাবি করেছেন, “দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকাধীন বিভিন্ন গ্রামে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে ভ্যান বা টোটো করে নিয়ে যেতে হয়। অথচ সরকারি টাকায় কেনা অ্যাম্বুল্যান্স পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে।”
সাধারণের স্বার্থে যাতে অ্যাম্বুল্যান্সটি ব্যবহার করা যায় তার অবিলম্বে ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তারা। যদিও দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান জানান, “অ্যাম্বুল্যান্সটি বিএমওএইচ-কে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে কিন্তু তিনি নিয়ে যাননি।”
মেমারির প্রাক্তন বিধায়ক আবুল হাসেম মণ্ডল জানান, “২০১৩ সালে মেমারির দেবীপুরের বাসিন্দাদের কথা ভেবে আমি আমার বিধায়ক তহবিল থেকে দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতকে অ্যাম্বুল্যান্সটি দিই। কিন্তু ২০১৩ সালে তৎকালীন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অ্যাম্বুল্যান্সটি চালানোর কোনও উদ্যোগই নেননি।”
তাঁর অভিযোগ, “সেই সময় যারা পঞ্চায়েত চালাতেন তাদের কাছে আমি প্রিয়পাত্র ছিলাম না তাই ইচ্ছাকৃতভাবেই অ্যাম্বুল্যান্সটি না চালিয়ে ফেলে রাখা হয়। পরে ২০১৮ সালে পঞ্চায়েতে নতুন বোর্ড এলেও আজও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। ১০ বছর হয়ে গেলেও আজও অ্যাম্বুল্যান্সটি ১ কিলোমিটারও চালানো হয়নি।”
এদিকে এই ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। BJP বর্ধমান জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র জানান, “মাননীয়ার রাজত্বে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। রাজ্যজুড়ে বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কারণে সাধারণের অসহায় অবস্থা প্রায়ই ফুটে উঠছে। অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে নানান অভিযোগ উঠলেও মাননীয়া তা মানতে রাজি নন। অথচ তার দলেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে সরকারি টাকায় কেনা অ্যাম্বুল্যান্স নষ্ট হচ্ছে। মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে দ্রুততার সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্সটি যাতে সাধারণের পরিষেবার জন্য ব্যবহার করা হয় তার দাবি রাখছি।”