হুগলির বৈদ্যবাটি পুরসভার পরিচালিত এই প্রেক্ষাগৃহ সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকছে। কয়েকশো আসন বিশিষ্ট এই প্রেক্ষাগৃহে চলত নানান সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সংস্কারের অভাবে আজ তা ভগ্নপ্রায় দশায় পরিণত হয়েছে। কোথাও ভেঙে ঝুলছে পাখা, কোথাও আবার ভেঙে পড়ে রয়েছে বসার চেয়ার।
প্রেক্ষাগৃহের বিভিন্ন জায়গায় খসে পড়ছে ছাদের সিলিং। দেওয়ালের অনেকাংশে নেই বালি সিমেন্ট-এর আস্তরণ। এই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাতেই চলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যে কোনও সময় ঘটতে পারে বড়সড় বিপদ। অনুষ্ঠানের দিন কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় এই সব জায়গা। আর এই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন তুলছেন সংস্কৃতি জগতের মানুষজন।
পুরসভা সূত্রে খবর, সত্যজিৎ রায় এর নামে নামাঙ্কিত প্রেক্ষাগৃহটি ১৯৯৪ সালে বাম আমলে তৈরি হয়। তবে তারপর থেকে আর কোনওরকম কাজ হয়নি। তবে বিপদ এড়াতে মাঝে মধ্যেই সংস্কার করা হয় দাবি পুরপ্রধানের। পুরসভার চেয়ারম্যান পিন্টু মাহাত বলেন, “প্রেক্ষাগৃহটি আধুনিকীকরণ করতে ডিপিআর তৈরি করে নগর উন্নয়ন সংস্থার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। যার ব্যয় হবে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। টাকা এলেই কাজ শুরু হবে। সেন্ট্রাল এসি থেকে অত্যাধুনিক সাউন্ড লাইট সব করে দেওয়া হবে।”
স্থানীয় বাচিক শিল্পী গৌরী ভট্টাচার্য বলেন “আগে যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন, তিনি বলেছিলেন এটাকে রেনোভেট করা হবে। সেই জন্য কিছুদিন বন্ধ থাকল। কিন্তু তারপর থেকে কোনও কাজ হয়নি অথচ বন্ধ থাকল। ফলে যে কোনও অনুষ্ঠান করার জন্য আমাদের চন্দননগর, কলকাতা দূরে যেতে হয়।” তবে এখনও সত্যজিৎ রায় ভবনের জরাজীর্ণ অবস্থায় কিছু কিছু অনুষ্ঠান চলছে। যে কোনও সময়ে প্রাণহানি ঘটতে পারে। যত তাড়াতাড়ি এর সংস্কার হবে এবং আধুনিকীকরণ হলে সকলেরই সুবিধা হয় বলে জানিয়েছে শিল্পী মহল।
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতা স্নেহাংশ মোহন্ত বলেন, “বহুকাল ধরে সত্যজিৎ রায় ভবনের বেহাল দশা, নিজেরা তো কিছু করতে পারিনি, যা ছিল তাও রক্ষণাবেক্ষণ এর অভাবে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যা টাকা-পয়সা আসছে শুধু নিজেরা লুটেপুটে খাচ্ছে। নিজেদের কঙ্কালসার চেহারার মতো সত্যজিৎ রায় ভবনের কঙ্কালসার চেহারাও বাঁশ দিয়ে ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করছে।”