Storm In Kolkata : উম্পুনের পর বিশেষজ্ঞ কমিটি, তবু সোমবার গাছ পড়েছে ৪৫টি – when there is a storm in the city there is no end to falling trees in kolkata


এই সময়: উম্পুনের ধাক্কায় কলকাতায় ৬ ফুট উচ্চতার গাছ উপড়ে পড়েছিল ১৫ হাজারেরও বেশি। তার পর ঝড়ের ধাক্কায় গাছ পড়া আটকাতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গড়েছিল কলকাতা পুরসভা। কিন্তু তার পর প্রায় তিন বছর হতে চলল, শহরে ঝড় হলে গাছ পড়ার ঘটনায় বিরাম নেই। সোমবার সন্ধ্যাতেই কালবৈশাখীর দাপটে কলকাতায় পড়েছে ৪৫টি গাছ।

Thunder Storm And Rain: প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে ব্যাঘাত রোমান্সে, গাছের নীচে আশ্রয় নিতে মর্মান্তিক পরিণতি যুগলের
যার অধিকাংশেরই বয়স ৪০ বছরের বেশি। তা হলে কী করছে ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি? সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুরসভার অন্দরেই। ঝড়ে লাগাতার গাছ পড়ার বিষয়টি চিন্তা বাড়াচ্ছে পুরসভার উদ্যান বিভাগের কর্তাদেরও। সেই জন্যই মঙ্গলবার পর্যালোচনা বৈঠক করে পুরসভা। উদ্যান বিভাগের এক কর্তা বলছেন, ‘লাগাতার গাছ পড়াটা আমাদের কাছে চিন্তার। কী ভাবে এটা আটকানো যায়, তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। সবুজরক্ষায় যা যা করার, তা সবই করা হবে।’

সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে পুর কর্তৃপক্ষকে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কলকাতায় যে সব এলাকায় গাছ পড়ছে, তার আশপাশের তল্লাটে কংক্রিটের জঙ্গল হলে সেটা সমস্যার। এর ফলে গাছের পুষ্টি ঠিক মতো হচ্ছে না। সোমবার বিকেল-সন্ধের ঝড়ে সে ভাবে গাছের কোনও ক্ষতি হয়নি রবীন্দ্র সরোবর বা সুভাষ সরোবরে।

Durgapur Thunderstorm : মাত্র আধণ্টার প্রাকৃতিক দুর্যোগ! তাতেই লণ্ডভণ্ড অভিষেকের সভাস্থল
সেই প্রসঙ্গ টেনে কলকাতা পুরসভার পরিবেশ বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য তথা বোস ইনস্টিটিউটের পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘দুই সরোবরের আশপাশে সে ভাবে নির্মাণ না-থাকার কারণে গাছের শিকড় অনেক শক্ত। কিন্তু কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় কংক্রিট এতটাই বেশি যে, বহু গাছ তাদের শিকড় বেশি দূর ছড়াতে পারে না। তাই, আমরা সুপারিশ করেছি, প্রয়োজনে গাছের চার দিক টুকু বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কোনও ভাবেই ক্রংক্রিট দিয়ে ঘেরা যাবে না, গাছের আশপাশেও কংক্রিট না-রাখার চেষ্টা করা হবে।’

Storm In West Bengal : মোকা নিয়ে চর্চার মধ্যে ১০ মিনিটের ঝড়! লণ্ডভণ্ড বালুরঘাটের একাংশ
কলকাতায় গাছ পড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে অবৈজ্ঞানিক ট্রিমিং বা গাছের ডালপালা ছেঁটে ফেলাও দায়ী বলে উদ্ভিদ বিজ্ঞানী আকরামুল হক মনে করেন। তাঁর কথায়, ‘শহরে বর্ষার আগে বা পুজোর সময়ে একশো দিনের কর্মীদের দিয়ে ট্রিমিং করানো হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গাছের একটা দিক বেশি ছাঁটা হয়। এর ফলে গাছের ভারসাম্য নষ্ট হয় ও অক্সিজেন উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়। সেই সঙ্গে শুকিয়ে যায় গাছের শিকড়ও। যার ফলে হালকা ঝড় হলেই গাছ পড়ছে।’ তার উপর সোমবার বিকেলে হালকা নয়, রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছে কালবৈশাখী। তিন মিনিট ধরে ঘণ্টায় ৮৪ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়েছে।

কলকাতা পুরসভা সূত্রেরই খবর, যে কোনও মুহূর্তে পড়ে যেতে পারে, কলকাতায় এমন গাছের সংখ্যা ৩০০-র আশপাশে। ওই গাছগুলি কী ভাবে বাঁচানো যায়, সেই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে উদ্যান বিভাগের আধিকারিকদের দ্রুত পদক্ষেপ করতে এ দিন নির্দেশ দিয়েছেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমার।

Kolkata Traffic : ঝড়ে লণ্ডভণ্ড একাধিক এলাকা, কোন কোন রাস্তায় যানজট? রইল শহরের ট্রাফিক আপডেট
এ দিনের বৈঠকে পুর কর্তৃপক্ষকে বিশেষজ্ঞরা জানান, এ বার যে সব নতুন গাছ লাগানো হবে, সেগুলির ক্ষেত্রে মাটি নির্বাচনের পাশাপাশি ওই এলাকা দিয়ে বিদ্যুৎ অথবা জলের লাইন গিয়েছে কি না, সেটা দেখাও জরুরি। কারণ, মাটির নীচে, গাছের শিকড়ের কাছে তার থাকলে শিকড় শক্তিশালী হতে পারে না। ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছগুলি প্রতিস্থাপনেরও যথাসাধ্য চেষ্টা করা হবে বলে এ দিন পুরসভার ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *