BJP Bengal : কর্নাটকে হারের প্রভাব বঙ্গ বিজেপির অন্দরে, ডানা ছাঁটা হবে বিএল সন্তোষ-ঘনিষ্ঠদের? – bjp in bengal raised question about bl santhosh role after karnataka ellection defeat


এই সময়: আদার ব্যাপারীরা সচরাচর জাহাজের খোঁজ রাখেন না। বাংলার বিজেপি নেতারা তেমনই সাধারণত মাথা ঘামাতে চান না, জাতীয় রাজনীতিতে দলের কোন কেন্দ্রীয় নেতার গুরুত্ব বাড়ল বা কমলো, তা নিয়ে। কিন্তু খোদ বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সাংগঠনিক) বিএল সন্তোষই যখন আতস কাচের নীচে, তখন বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্ব স্বভাবতই চোখ-কান খোলা রাখছেন। কারণ, সন্তোষের রাজনৈতিক উত্থান-পতনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার বেশ কয়েক জন বিজেপি নেতার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ।

Bharatiya Janata Party : কর্নাটক থেকে শিখে বঙ্গে ফের দীপ জ্বালাতে কি দিলীপ-শরণ
কর্নাটকে দলের ভরাডুবির কারণ পর্যালোচনা এখনও পদ্মে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়নি। কিন্তু বিজেপি সূত্রের খবর, কর্নাটকে ভোটের ফল বেরোনোর দিনই দলীয় নেতৃত্বের একাংশ সন্তোষকে কাঠগড়ায় তুলে ‘বিচার প্রক্রিয়া’ শুরু করে দিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, সন্তোষের নিজের রাজ্য কর্নাটক। সেখানেই যদি বিজেপির এই শোচনীয় দশা হয়, তা হলে গোটা দেশের সংগঠন তিনি সামলাবেন কোন যোগ্যতায়?

প্রায় এক যুগ কর্নাটক রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদে ছিলেন সন্তোষ। পরে, ২০১৯-এ রামলালকে সরিয়ে সন্তোষকে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) করে কর্নাটক থেকে দিল্লিতে আনা হয়। সন্তোষের হাতেই সঁপে দেওয়া হয় গোটা দেশে বিজেপির সংগঠন বিস্তারের গুরুদায়িত্ব। সূত্রের খবর, সেই চেয়ারে বসেই তিনি দক্ষিণী রাজ্যগুলিতে বিজেপির সংগঠনে ব্যাপক রদবদল করেন।

Bharatiya Janata Party : জল মিশানো রিপোর্টে ভরসা নেই, বাংলায় তাই নয়া কৌশল বিজেপির
তার পর তাঁর নজর পড়ে বাংলায়। তিনি নিশানা করেন রাজ্য বিজেপির দিলীপ ঘোষ-সুব্রত চট্টোপাধ্যায় জুটিকে। গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর, মূলত সন্তোষের অঙ্গুলিহেলনেই ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের মুখে বঙ্গ-বিজেপির তৎকালীন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে সেই জায়গায় অমিতাভ চক্রবর্তীকে নিয়ে আসা হয়। এমনকী, মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে সুকান্ত মজুমদারকে রাজ্য সভাপতি করার পিছনেও সন্তোষের ভূমিকা সব চেয়ে বেশি ছিল বলে বিজেপির অন্দরের খবর।

গত এক বছরে বিভিন্ন সময়ে সন্তোষ-ঘনিষ্ঠ অমিতাভ চক্রবর্তীকে কেন্দ্র করে বঙ্গ-বিজেপিতে উত্তেজনার পারদ চড়েছে। রাহুল সিনহা-ঘনিষ্ঠ রীতেশ তিওয়ারিকে দল থেকে বহিষ্কার করা, দিলীপ-ঘনিষ্ঠ সায়ন্তন বসুকে দলীয় কোনও পদ না-দেওয়া- এই সব ঘটনায় অমিতাভর বিরুদ্ধে অসন্তোষ এক রকমতুঙ্গে ওঠে। এমনকী, বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরও অমিতাভর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিষোদ্গার করেছেন।

TMC Congress Alliance : মমতার জোটবার্তায় নজর রেখেও চুপই বঙ্গ বিজেপি
সূত্রের খবর, অমিতাভর ক্ষমতা খর্ব করার দাবি নিয়ে রাজ্য বিজেপির একাংশ দফায় দফায় দিল্লিতে গিয়ে দরবারও করেন শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। রাজনৈতিক শিবিরের অনেকের মতে, এত কিছুর পরেও অমিতাভর মাথায় খোদ বিএল সন্তোষের হাত থাকায় তাঁর গায়ে বিদ্রোহের আঁচ লাগেনি। বঙ্গ-বিজেপিতেও ক্ষমতার বিন্যাসে কোনও পরিবর্তন ঘটেনি।

Karnataka Election Result : ‘কর্নাটকে BJP-র ফল ভালো হবে না, আগেই জানা ছিল’, মন্তব্য হিমন্তর

মাঝখান থেকে বিদ্রোহী শিবিরের নেতারা আরও কোণঠাসা হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। রাজ্য বিজেপির এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠরা অমিতাভর ডানা ছাঁটার অপেক্ষায় আছেন। শুধু রাজ্য নয়, জেলা স্তরেও দিলীপপন্থীদের কোণঠাসা করে রেখেছেন অমিতাভ এবং তাঁর সহযোগীরা। আর অমিতাভকে সব রকম ভাবে মদত দেন সন্তোষজি।’

Karnataka Election Result : হিন্দুত্বের তাস ব্যর্থ, প্রশ্নে মোদী-শাহের ম্যাজিকও?
কিন্তু সেই বিএল সন্তোষই এ বার কাঠগড়ায়, কর্নাটক বিধানসভা ভোটে বিজেপির পরাজয়ের কারণে। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতাই প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের সর্বভারতীয় স্তরে। বাংলার এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘এতদিন সন্তোষজির ছাতার তলায় থেকে বাংলার বিজেপি নেতা-কর্মীদের উপর ছড়ি ঘোরাতেন অমিতাভরা। এ বার সেই ছাতাতেই ফুটো ধরা পড়েছে। লোকসভা ভোটের আগে সংগঠনের প্রশ্নে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইবেন না নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। ফুটো ছাতার বদল নিশ্চয়ই হবে। তখন বঙ্গ-বিজেপিতেও নবজোয়ার আসবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *