Egra Blast News : এগরায় আক্রান্ত পুলিশ, এবার ক্ষোভের বিস্ফোরণ – the police had good relations with bhanu owner of egra factory villagers showed protest against police


এই সময়: পুলিশের সঙ্গে দহরম মহরম ভানুর, এই অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দাদের সব ক্ষোভ মঙ্গলবার এগরায় বিস্ফোরণের পর আছড়ে পড়েছিল পুলিশের উপর। বুধবারও তার অন্যথা হয়নি। তবে এদিন এলাকার বাসিন্দারা পুলিশের পাশাপাশি নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দেন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের উপরেও। ‘চোর-চোর’ বলেও স্লোগান তোলা হয় তাঁদের লক্ষ্য করে।

এগরার খাদিকুল গ্রামে বেআইনি বাজি কারখানার মালিক ভানুর (কৃষ্ণপদ বাগ) বিরুদ্ধে অভিযোগ একদিনের নয়। তবে তার রাজনৈতিক প্রভাব কিংবা পুলিশের সঙ্গে সখ্যের কারণে খুব একটা মুখ খোলার সাহস করতেন না কেউ। আর সে জন্যই মঙ্গলবার ভানুকে পালিয়ে যেতে দেখে গ্রামবাসীদের আক্রোশের শিকার হয় পুলিশ। প্রহৃত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী। বুধবারও পুলিশের বিরুদ্ধে অসন্তোষ কমেনি। ফলে এদিন ঘটনাস্থলে যাওয়া তৃণমূল নেতৃত্বের দিকে ঘুরে যায় বিক্ষোভের মুখ।

Egra Blast : বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যুমিছিল, মালিক ভানু জখম হয়েও ধাঁ
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ‘বহুদিন ধরেই ভানুর বাজি কারখানা চলছে। আগে চলত তাঁর বসতবাড়ি লাগোয়া জমিতে। বছর পাঁচেক আগে সেখানে বিস্ফোরণ হলে, পরিবারের লোকেরাই ভানুকে কারখানা বন্ধ করতে বলেন। তার পরেই তিনি বাড়ি থেকে দেড়শো মিটার দূরে ফাঁকা মাঠে এই বিশাল কারখানা তৈরি করেন। এর আগেও তিনবার ভানুর বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হলে তাতে পাঁচ জনের প্রাণ যায়।

Egra Bomb Blast: রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ওঠা-বসা! কী ভাবে উত্থান এগরার বেআইনি বাজি কারখানার ‘মালিক’ ভানুর?
কিন্তু প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ফের সেই ব্যবসা শুরু হয়। মাসছয়েক আগে ভানুকে পুলিশ বেআইনি বাজি কারখানা চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু জামিন পাওয়ার পরে নতুন উদ্যেমে তিনি বাজি তৈরির কাজ শুরু করেন। এই কারণে, গ্রামবাসীদের জমে থাকা রাগটা বাস্পের আকারে বেরিয়ে আসে মঙ্গলবারের ঘটনার পর। আর কারখানার মালিক পিঠটান দেওয়ায় পুরো রাগটা গিয়ে পড়ে সরাসরি পুলিশের উপর।

বুধবার ঘটনাস্থলে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিলেন পরিবেশমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন, পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র ও স্থানীয় বিধায়ক তরুণ মাইতি। তাঁদের দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীদের একাংশ। ‘চোর চোর’ স্লোগান তুলে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তবে সে সব এড়িয়ে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে ফিরে আসেন তাঁরা। সূত্রের খবর, এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানসকে ফোন করে ঘটনাস্থলের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবরও নেন।

Egra Blast : মদ, ভয়েই কি জতুগৃহে কর্মীর ভিড়
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি দাবি করেন, ‘২০১৩ সালে ভানু পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। ২০১৮ সালে বৌমাকে পঞ্চায়েতে তৃণমূলের হয়ে দাঁড় করিয়েছিলেন। এনআইএ তদন্তের দাবি করেছি আমরা। পুলিশ প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করছে।

Egra Blast : এগরার গ্রামে বাধার সম্মুখীন তৃণমূলের প্রতিনিধি দল, দোষীদের কঠোর শাস্তির আশ্বাস
শুধু তাই নয়, আমরা চাই পুলিশমন্ত্রী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনার দায় নিয়ে পদত্যাগ করুন।’ মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ২৫ হাজার লোক নিয়ে এগরায় মহামিছিল হবে বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে, রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেন, ‘দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছেন এনআইএ হলেও আপত্তি নেই। সেখানে তিনি, বিরোধী দলনেতা কী বললেন, যা বললেন তা অপ্রাসঙ্গিক।’ অন্যদিকে, এগরার বিস্ফোরণের ঘটনায় রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। রাজ্যের শান্তিস্থাপনে সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।’

রাজনৈতিক ভাবে ওই এলাকায় যে বিজেপির জমি খুব শক্ত, তা বলা যাবে না। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৪ আসনের সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল ১০টি ও ৪টি আসনে নির্দল প্রার্থীরা জিতেছিল। বোর্ড গঠন করলেও মাস তিনেক আগে নিজেদের মধ্যে কলহে অনাস্থা এনে দলীয় প্রধানকে সরিয়ে দেন তৃণমূলেরই একাংশ। বর্তমানে সেই সদস্যদের সমর্থনে যিনি প্রধান হয়েছেন, তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে জিতলেও বিজেপির সমর্থন ছিল। ফলে ওই এলাকায় রাজনৈতিক ভারসাম্য কিছুটা টালমাটাল। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ভানু নিজের ব্যবসা বাড়িয়ে নেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *