আবার উপাচার্য পদে তাঁর চাকরির মেয়াদ ১২ দিন থাকার মধ্যেই সাধন চক্রবর্তী ওই পদ থেকে স্বেচ্ছা অবসর নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। এদিন রাজ্যপালের সিনিয়র স্পেশাল সেক্রেটারি সাধন চক্রবর্তীকে চিঠি দিয়ে জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যপালের পূর্ববর্তী অপসারণ সংক্রান্ত নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে যাতে তিনি আজ, শুক্রবার ইস্তফা দিতে পারেন।
রাজভবন তাঁর অপসারণের নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর আচার্য-রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে সরব হন সাধন। তিনি বলেন, ‘এই নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মবহির্ভূত এবং বেআইনি ছিল। আমি গত আট বছর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে কাজ করেছি। আমার অতিরিক্ত তিন মাসের কাজের সময়সীমা আর মাত্র কয়েকদিন বাকি ছিল।
এর মধ্যে বেআইনি নির্দেশ দিয়ে আচার্য আমাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছেন।’ তাঁর সংযোজন, ‘উপাচার্য ছাড়াও আগে আমি অধ্যাপক হিসেবে যাদবপুরে যে কাজ করেছি, তা নিষ্ঠার সঙ্গে করেছি। কোনওরকম ব্যাখ্যা ছাড়াই আচার্য এভাবে একজন উপাচার্যকে সরিয়ে দিতে পারেন না। এটা রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রেও একটা নজির হয়ে থাকবে।’
কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীকে মেয়াদ শেষের আগেই রাজ্যপাল অপসারণের নোটিস দেন। সেই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন উপাচার্য। এদিন শুনানি চলাকালীন বিচারপতি কৌশিক চন্দের পর্যবেক্ষণ, বিশ্ববিদ্যালয় কাউকে উপাচার্য নিয়োগ করতে পারে। এটা অন্তর্বর্তী সিদ্ধান্ত বলা যায় বা এটা অ্যাসাইন্ড বলা যায়।
উপাচার্য ওই দায়িত্ব পেয়েছেন। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁর পদত্যাগ করা উচিৎ মর্যাদার প্রশ্নে। সাধন চক্রবর্তীর আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি চন্দের প্রশ্ন, ‘তাঁর কাজে নিয়োগকর্তা যদি খুশি না হন, কেন থাকবেন?’ উপাচার্যের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র ও শ্রীজীব চক্রবর্তী জানান, তাঁদের মক্কেল আর এই অসম্মান নিতে চান না।
রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘যদি উনি নিজেই সরে যান, কিছু বলার নেই। উপাচার্য নিয়োগ শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে হয়। সরানোর ক্ষেত্রেও সেটাই প্রযোজ্য।’ তারপরেই রাজ্যপালের তরফে আগের নোটিস প্রত্যাহার করে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। উপাচার্যের আইনজীবী তখন আদালতকে জানান, ২৮ মে পর্যন্ত চাকরি থাকলেও তাঁর মক্কেল পদত্যাগ করবেন।