Diploma Doctor : গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবকে সায় এনএমসি আইনেই – the health officials clarified that the path to create rural health services is smooth in the central law


অনির্বাণ ঘোষ
মুখ্যমন্ত্রীর ‘ডিপ্লোমা ডাক্তার’-এর প্রস্তাবে চিকিৎসকদের অনেকে যতই প্রশ্ন তুলুন, কেন্দ্রীয় আইনেই গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবক তৈরির পথ মসৃণ বলে স্পষ্ট করে দিলেন স্বাস্থ্যকর্তারা। গ্রামে পরিষেবা দেওয়ার জন্যে তিন বছরের ডিপ্লোমা ডাক্তার তৈরি করা যায় কিনা, বিশেষজ্ঞদের সে সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রস্তাব ঘিরে স্বাস্থ্যমহলের বড় অংশে তৈরি হয়েছে ঘোর বিরোধিতা। এর প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি তার আইনি বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

Diploma Doctor : গ্রামাঞ্চলে ডাক্তার কম, তাই রাজ্যের ভাবনা স্বাস্থ্য পরিষেবকের
কিন্তু বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যরা জানাচ্ছেন, এর আইনসিদ্ধতা নিয়ে কোনও সমস্যাই নেই। ২০১৯-এর ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি) আইনের ৩২ নম্বর ধারাতেই ‘কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার’ তৈরির সংস্থান রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তারা মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবের সঙ্গে এর কোনওই ফারাক নেই।

এনএমসি আইনের ৩২ নম্বর ধারার তিনটি উপধারায় কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার (সিএইচপি) তৈরির বিষয় রয়েছে। বলা হয়েছে, চিকিৎসার মধ্যবর্তী পর্যায় পর্যন্ত সিএইচপি-দের সীমিত ডাক্তারি করায় এনএমসি-র অনুমতি দিতে বাধা নেই। তাঁরা সবাই মডার্ন মেডিসিন বা অ্যালোপ্যাথি মতে রোগী দেখবেন। তবে তাঁরা কতটা ‘ডাক্তারি’ করতে পারবেন, অর্থাৎ সীমানা কতটা, তা নির্ধারণ করে দেবে কমিশনই। একটি রাজ্যে কতজন সিএইচপি থাকতে পারবেন, তা নিয়েও দিকনির্দেশ রয়েছে এনএমসি আইনে। তাতে বলা হয়েছে, এই সংখ্যা কখনওই সংশ্লিষ্ট রাজ্যে থাকা এমবিবিএস পাশ চিকিৎসকদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি হবে না।

Doctors Diploma : AIDSO-র স্বাস্থ্য ভবন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার! পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তি
৩২ নম্বর ধারায় এ কথাও স্পষ্ট বলা আছে যে, এই কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার বা গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবকদেরও রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের পাশাপাশি এনএমসি’র জাতীয় স্তরের রেজিস্টারে নথিভুক্ত থাকতে হবে। তাঁরা নির্দিষ্ট কিছু সাধারণ রোগের চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ লিখতে পারবেন প্রেসক্রিপশনে। তবে নিজে থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে স্বাধীন ভাবে রোগী দেখে প্রেসক্রিপশন লিখতে পারবেন না। এই পরিধির বাইরে রোগী দেখে প্রেসক্রিপশন লিখতে হলে তা করতে হবে এমবিবিএস পাশ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে। সিএইচপি-দের রোগী দেখার ক্ষেত্রে ইমার্জেন্সির কোনও স্থান নেই। তাঁরা চিকিৎসা করবেন মূলত প্রাথমিক ও প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়।

Diploma Doctor : ডিপ্লোমা ডাক্তারে মত নেই বিশেষজ্ঞ কমিটির! মমতার প্রস্তাব নিয়ে মুখ খুললেন শান্তনু সেন
মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবের বাস্তব ভিত্তি খতিয়ে দেখতে প্রবীণ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি এই নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করছে। সেই কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘আমরাও এনএমসি-র ৩২ নম্বর ধারা মেনেই সায় দিচ্ছি মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবের মূল ভাবনায়। তিন বছরের ক্লাসরুম ও প্র্যাকটিক্যাল প্রশিক্ষণের পর গ্রামাঞ্চলে একেবারে প্রাথমিক স্তরে রোগী দেখতে পারবেন প্রস্তাবিত গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবকরা। তবে প্রেসক্রিপশনের অধিকার তাঁদের কতটা দেওয়া হবে, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’ তিনি জানাচ্ছেন, সোমবারের মধ্যে কমিটির প্রত্যেক সদস্য এ ব্যাপারে নিজস্ব মতামত জানিয়ে পৃথক পৃথক রিপোর্ট দেবেন সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের কাছে।

Balurghat District Hospital : সেরার শিরোপা! বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের মুকুটে উঠল নয়া পালক
চিকিৎসক সংগঠন ওয়েস্টবেঙ্গল ডক্টর্স ফোরামের তরফে কৌশিক চাকী বলেন, ‘চিকিৎসক মহল থেকে যতই বিরোধিতা আসুক, মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব বাস্তবায়িত করার রসদ রয়েছে এনএমসি আইনে। বিশেষজ্ঞ কমিটিও তা জানে। তাই ওঁরা যে সায় দেবেন, স্বাভাবিক।’ সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স এবং সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মানস গুমটা ও সজল বিশ্বাস অবশ্য মনে করছেন, মেডিক্যাল অফিসার পদে নিয়মিত ও স্বচ্ছ নিয়োগ হলে গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবকের দরকারই হতো না।

Nadia News : কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল পরিদর্শনে সাংসদ, তাতেও হল না অবস্থার পরিবর্তন
যদিও তা মানতে নারাজ স্বাস্থ্যকর্তাদের বড় অংশ। এক আমলা বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে চতুর্থ শ্রেণির পদেও ১০০ শূন্যপদে আবেদন জমা পড়ে লক্ষাধিক৷ স্নাতকোত্তর পাশ, এমনকি পিএইচডি ডিগ্রিধারীও থাকেন৷ কিন্তু সরকারি চিকিৎসক পদে একেবারে উল্টো ছবি দেখা যায় বাংলায়।’ তিনি জানান, ২০১৬-র জানুয়ারিতে ৩১৩৫টি পদে জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসারের বিজ্ঞাপন বেরিয়েছিল। কিন্তু ওয়াক-ইন-ইন্টারভিউয়ে এসেছিলেন মোটে ১৯০০-র কিছু বেশি প্রার্থী। তাই গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবক নিয়োগ ছাড়া পরিস্থিতি সামাল দেওয়া একপ্রকার অসম্ভব গ্রামবাংলায়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *