তবে এত ভালো হবে বলে ধারনা করিনি। পড়াশোনার নির্দিষ্ট কোনও সময় ছিল না। যেদিন যতটুকু দরকার ততটুকুই পড়তাম”। এক মাদ্রাসা শিক্ষক জানালেন, “ইকবাল আমাদের মাদ্রাসার গর্ব। সব সময় তাঁকে বিভিন্নভাবে মাদ্রাসা থেকে সাহায্য করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস ছিল আসিক মাদ্রাসার মুখ উজ্জ্বল করবে”।
এবার মাধ্যমিকের রেজাল্ট মুর্শিদাবাদকে হতাশ করেছে। ১ থেকে ১০ এর মধ্যে নেই কেউ। হাই মাদ্রাসা বোর্ডে প্রথম হয়ে সেই অভাব মেটালেন আসিক ইকবাল। ভাবতার বাসিন্দা আসিক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছে। ছোট্ট চালাঘরে বসেই এলাকায় শিক্ষার আলো জ্বেলে দিয়েছে।
ছোট থেকেই স্বল্পভাষী আসিক অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। পরিবারের সামর্থ্য ছিল না গৃহশিক্ষক দেওয়ার। মাদ্রাসার শিক্ষকদের সাহায্য নিয়েছে যখন যেমন প্রয়োজন পড়েছে। বাবা মহম্মদ ইয়ামিন শেখ পেশায় হকার। কলকাতায় সাইকেলের ভাঙাচুরো জিনিস কিনে বেড়ান। সেই আয়ের টাকা থেকেই সংসার চলে।
কলকাতা থেকে মাসে একবার বাড়ি এসেও ছেলের খোঁজখবর নেওয়ার ফুরসত থাকত না। মায়ের পরিচর্যাতেই বড় হয়ে উঠেছে আসিক। মা অল্পশিক্ষিত নিপাট গৃহবধূ। তবে ছেলে মেয়েদের উপর নজর ছিল সর্বক্ষনের। বাবা ইয়ামিন শেখ বলেন, “প্রচণ্ড আর্থিক অভাবে দিন কেটেছে।
সেভাবে ছেলের চাহিদা পূরন করতে পারিনি। তবে মাদ্রাসার শিক্ষক প্রতিবেশীরা বলতেন আসিক খুব ভালো ছেলে। খুবই গর্ব হচ্ছে আজ”। আসিকের প্রাপ্ত নম্বর ৭৮১। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আজ প্রকাশিত হল পশ্চিমবঙ্গ হাই মাদ্রাসা, আলিম এবং ফাজিলের ফলাফল।
এবার তিনটি বিভাগেই ছাত্রীদের টেক্কা দিয়েছে ছাত্ররা। তিনটি ক্ষেত্রেই ছাত্রীদের তুলনায় ছাত্রদের পাশের হার বেশি। এবার পাশের হার ৮৮.০৯ শতাংশ। মোট ৩৫,২০৬ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। পাশ করেছেন ৩১,০১৪ জন।