বগটুই গ্রামের বাসিন্দা এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সামিয়া সুলতানা। বোমা বারুদ আর লাশের গন্ধ মেখেই এবার মাধ্যমিকে রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে সে। সামিয়া সুলতানার বাড়ি বগটুই গ্রামের পূর্বপাড়ায়।
ওই পাড়াই জায়গা করে নিয়েছে বঙ্গ রাজনীতির অভিশপ্ত ঘটনার তালিকায়। গত বছরের ২১ মার্চ এই গ্রামেই পুড়ে এবং বোমায় মৃত্যু হয়েছিল ১১ জনের। এরপরেই গ্রামে সিবিআই, পুলিশের দাপাদাপিতে তটস্থ ছিল গোটা এলাকা। আতঙ্কে ছিল সামিয়া এবং তাঁর পরিবারও। তবে মানসিকতার জোরে আজ সাফল্য লাভ করেছে সামিয়া। বগটুই গ্রামের দুর্নাম ঘোঁচানোর চেষ্টা করেছে সে।
সামিয়া বলে, ” ওই ঘটনার পরে বেশ ভয়েই ছিলাম। চারিদিকে পুলিশের ছোটাছুটি, গ্রেফতারি এসব দেখে বেশ আতংকের মধ্যে ছিলাম আমরা সকলেই। এরপরেও পড়াশোনাটা চালিয়ে গিয়েছি। আমরা পড়াশোনা না করলে এই গ্রামের কুখ্যাতি মিটবে না।” আগামী দিনে পড়াশোনায় আরও উন্নতি লাভের স্বপ্ন দেখছে সামিয়া।
সামিয়া জানায়, সে আগামীদিনে অধ্যাপক হয়ে বগটুই গ্রামের হানাহানি বন্ধ করে শিক্ষার আলো ফেরাতে চায়। মেয়ের সাফল্যে খুশি বাবা মহম্মদ জাফর উদ্দিন শেখ ও মা নার্গিস হাসিনা। তাঁরা বলেন, “খুব আতঙ্কের মধ্যে মেয়ে পড়াশোনা করেছে। মেয়ের জেদের কাছে পরাজিত হয়েছে হানাহানি।”
গত বছর ৩১ শে মার্চের বগটুই গ্রামে ভয়ানকন হত্যাকাণ্ড ঘটে। প্রথমে স্থানীয় উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা গ্রাম। এরপরের দিন হঠাৎ মধ্যরাত্রেই বাইরে কিছু দুষ্কৃতীরা গ্রামে হামলা চালায়। ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাড়িতে। আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ফলে দগ্ধ হয়েই মৃত্যু হয় শিশু, মহিলা জনের। ঘটনার পর গ্রামে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।