মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হল শুভদীপ পালের। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের এই ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টকে ভর্তি করতে গিয়ে এসএসকেএম-এ তুলকালাম করেছিলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। পথ দুর্ঘটনায় তার মাথা, পা, বুকে আঘাত লাগে। এসএসকেএম হাসপাতালে শুভদীপকে ভর্তি করতে গিয়ে মদন মিত্রের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে দুর্বব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। সে নো টু পিজি বলে স্লোগান তুলেছিলেন মদন মিত্র। এনিয়ে ভবানীপুর থানায় মদনের বিরুদ্ধে এফআইআর করে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর তত্পরতায় মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে পারেন শুভদীপ। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ শুভদীপের মৃ্ত্যু হয়।
আরও পড়ুন-সন্ধে হলেই টিনের চালে পড়ছে ইটপাটকেল, টানা ৪২ দিন আতঙ্কে জলপাইগুড়ির একাধিক পরিবার
স্বাস্থ্যকর্মী শুভদীপের মৃত্যুতে মর্মাহত মদন মিত্র। মঙ্গলবার আসানসোল থেকে ফেরার পথে তিনি বলেন, ওই ছেলেটির পরিবারের লোকেরা মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে আবেদন করেছিলেন। আমাদের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে তাকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। নিজে গিয়ে ওকে দেখেও এসেছিলাম। মেডিক্যাল কলেজের চিকিত্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা অমানুষিক চেষ্টা করছিলেন ওকে বাঁচানোর। তার পরেও নিয়তি তো কেউ এড়াতে পারে না। খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ওর আত্মার শান্তি কামনা করি। আজ পোস্ট মর্টেম হয়ে গেলে ওরা মেদিনীপুরের গ্রামে চলে যাবে। এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কি সেদিন বাঁচানো যেত শুভদীপকে? মদন মিত্র বলেন, এনিয়ে কোনও কথা বলব না। কারণ আমি ডাক্তার নই।
শুভদীপের পরিবারের তরফে জানানো হচ্ছে, যে অবস্থায় এক বেসরকারি হাসাপাতাল থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার রাতেই যদি সেখানে ভর্তি করা যেত তাহলে হয়তো শুভদীপকে বাঁচানো যেত। অন্যদিকে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের তরফে বলা হচ্ছে, যে অবস্থায় শুভদীপকে আনা তখন তাঁর অবস্থা খুবই সংকটজনক ছিল। সেইসময় ভেন্টিলেশনেই ছিলেন।
গত বুধবার পথ দুর্ঘটনায় আহত হন শুভদীপ। আহত অবস্থায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ন্য়াশনাল মেডিক্যাল কলেজে। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে য়াওয়া হয় মল্লিক বাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে ভেন্টিলেশনে ছিলেন শুভদীপ। পারিবারের আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় তাঁকে এসএসকেএম-এ আনা হয়। কিন্তু এসএসএকেএমে তাঁকে ভর্তি করা যায়নি। শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে তাঁকে ভর্তি করা হয় মেডিক্যাল কলেজে।
মেডিক্যাল কলেজে শুভদীপের পরিবারের এক সদস্য বলেন, হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আমাদের রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এই মুহূর্তে আর কী বলব! শুক্রবার রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা গেল কী হত বলতে পারব না। হয়তো পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারত। এমাদের একটা আশা ছিল। মদন মিত্র যেভাবে চেষ্টা করেছেন তা সবাই দেখেছেন। উনি বলেছেন পরিবারের পাশে থাকবেন। এটা আমাদের কাছে বড় প্রাপ্তি।