২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে যে বিজেপি কর্মীরা বুথে বুথে লড়াই দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই বিধানসভা ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের জেরে এলাকা ছাড়া বলে গেরুয়া শিবিরের অন্দরের খবর। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার, ২১ মে আলিপুরে জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রেক্ষাগৃহে বিজেপির রাজ্য কার্যকরণী বৈঠকে দিলীপ বলেছেন, ‘পুরোনো লড়াকু কর্মীরা অনেকেই ঘরছাড়া।
তাঁদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে। তাঁদের সবাইকে ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ওই লড়াকু কর্মীরা মাঠে না-নামলে পঞ্চায়েতে ভালো ফল করা যাবে না। পুরোনো কর্মীদের যে ভাবে হোক, সক্রিয় করে তুলতে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে।’ দিলীপের বক্তব্য, ‘জেলায় জেলায় ঘুরছি। সংগঠনের অবস্থা ভালো নয়। পুরোনো কর্মীরা অনেকে ঘরছাড়া, অনেকে বসে গিয়েছেন। অনেককে আবার দলই গুরুত্ব দিচ্ছে না। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। তবে সবার আগে, এখনও যে কর্মীরা ঘরছাড়া, তাঁদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’
২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে গোটা রাজ্যে পাঁচ হাজারের বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছিল বিজেপি। নিচু তলার দলীয় কর্মীদের লড়াইকে তারিফ করেছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে বিজেপির ভরাডুবির পর সেই ‘লড়াকু’ কর্মীরাই এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন বলে অভিযোগ।
দলই তাঁদের একাংশকে ত্রিপুরা, অসম, গুজরাটের মতো বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে আশ্রয় নেওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু তার পর প্রায় দু’বছর পেরিয়ে গেলেও বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্ব তাঁদের খবর সে ভাবে রাখেননি বলে দলীয় সূত্রের খবর। ভিন রাজ্যে তাঁদের অনেকেই নতুন কাজ খুঁজে নিয়ে গুছিয়ে থাকতে শুরু করে দিয়েছেন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দিলীপ উদ্বেগ প্রকাশ করার পরেই দলের রাজ্য কার্যকরণী বৈঠকে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল পুরোনো কর্মীদের সক্রিয় করে তুলতে জেলা সভাপতিদের নির্দেশ দেন। এখনও দলের কত জন কর্মী ঘরছাড়া, তার তালিকাও বনসল তৈরি করতে বলেছেন।
যদিও এই ব্যাপারে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলছেন, ‘ঘরছাড়া নয়, দলছাড়া। বিজেপির সংগঠন নেই। প্রতিদিন ওদের কর্মী কমছে। নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে ওঁরা সন্ত্রাসের কথা বলছেন।’