মৃতদেহ আজ, বুধবার বেলার দিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছবে বলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সূত্রে খবর। তবে সেই দেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত কবে হবে, সে ব্যাপারে এখনও অন্ধকারে মৃতের পরিবার এবং হাইকোর্ট নিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অজয় গুপ্ত। তাঁদের এখনও দিনক্ষণ কিছু জানানো হয়নি।
গত অক্টোবরে আইআইটি খড়্গপুরের হস্টেলে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়জান আহমেদের রহস্যমৃতুতে কর্তৃপক্ষ প্রথম থেকেই এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে দাবি করছিলেন। জেলা পুলিশের রিপোর্ট এবং মেদিনীপুর মেডিক্যালের ময়নাতদন্তের রিপোর্টও সেই দিকে ইঙ্গিত করে। কিন্তু মৃত ছাত্রের পরিবার হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে খুনের অভিযোগে।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার আদালত র্যাগিংয়ে বাধার ফলেই এই ঘটনা কিনা, তা নিয়ে চেপে ধরে কর্তৃপক্ষকে। পুলিশের তদন্ত ও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ত্রুটি দেখে বিচারপতি মান্থা অবসরপ্রাপ্ত ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ অজয় গুপ্তকে বিষয়টি পর্যালোচনার দায়িত্ব দেন। ২৫ এপ্রিল রিপোর্ট জমা দেয় ডাক্তার গুপ্তর কমিটি। রিপোর্টে ওই ছাত্রের মাথার পিছনে ভারী কিছুর আঘাত রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
অথচ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তার উল্লেখ ছিল না। ফয়জানের মৃত্যুর পর হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার দিকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা হয়ে থাকতে পারে বলেও রিপোর্টে জানান ওই বিশেষজ্ঞ। হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া এম্পুরার ওষুধ যে মাংসের পচনরোধ এবং বিষ হিসেবে ব্যবহার হয়–তা-ও জানানো হয় রিপোর্টে। একটা নীল বালতিতে কিছু হলুদ তরলও উদ্ধার হয়েছিল।
অথচ সে সব বাজেয়াপ্ত হিসেবে দেখায়নি পুলিশ। প্রসঙ্গত, ফয়জানের দেহ উদ্ধার হওয়ার তিন দিন আগে থেকে ওই ছাত্র নিখোঁজ ছিলেন বলে দাবি তাঁর সহপাঠীদের। তিন দিন আগেই তিনি মারা গেলেও কেন হস্টেলে মৃতদেহের গন্ধ ছড়াল না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ডাক্তার গুপ্ত কবর থেকে দেহ তুলে নতুন করে ময়নাতদন্তের সুপারিশ করেন।
বিচারপতি মান্থা সেই নির্দেশই দেন। কিন্তু রাজ্য সরকার সিঙ্গল বেঞ্চের ওই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের আবেদন খারিজ করে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রাখে। তার পরেই অবশেষে দেহ তোলা হলো কবর থেকে।