সেই সঙ্গে পটচিত্র এবং পটের গান নিয়ে হাজির থাকবেন সায়েরা চিত্রকর। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগ এবং বস্ত্র দফতর এবং ইউনেস্কোর তত্ত্বাবধানে গ্রামীণ হস্তশিল্প এবং সংস্কৃতির অংশ হিসেবে বাংলার শিল্পীরা হাজির থাকছেন। বাউল গান বাংলায় বহুল চর্চিত এবং বহুশ্রুত।
কিন্তু পটের গান সেই উচ্চতা ছুঁতে পারেনি। তবুও এর আকর্ষণ, সুরের মাদকতা মনকে টানে বৈকি। তাই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চণ্ডীপুর থানার হবিচক গ্রামের সায়েরা চিত্রকরের এখানে ডাক পড়েছে। তাঁর পটের গান এই সাংস্কৃতিক সম্মেলনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলার লোকগানের এও এক সম্মান প্রাপ্তি।
এতদিন কলকাতা, বীরভূম, শিলিগুড়ি এমনকি মুম্বাই, গোয়া, চেন্নাই, দিল্লি গিয়েছেন সায়েরা। স্বামী আবেদ চিত্রকরের সান্নিধ্যে পটচিত্র আঁকার পাশাপাশি পটের গান তাঁর স্নেহ-ভালবাসায় লালিত সন্তানের মতো। সামাজিক সচেতনতায় বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ, স্বাস্থ্য সচেতনতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে পটচিত্র আঁকার পাশাপাশি গান বেঁধে, সুর দিয়ে গেয়েছেন এই শিল্পী।
এমনি তাঁর ঝোলায় পৌরাণিক বিষয়েও বহু পটের গান রয়েছে। ইতিমধ্যে সরকারি উদ্যোগে জেলা ছাত্র-যুব উৎসবে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে জেলাগত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন লোকোগানে পূর্ব মেদিনীপুরের সেরা শিল্পীর পুরস্কার তিনি অর্জন করেছেন।
তিনি বলেন, “পটচিত্র এবং পটের গান নিয়ে বিদেশে প্রথম যাওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত। আমি আমার সেরা শিল্প তুলে ধরব সেখানে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের শিল্প, সংস্কৃতির সঙ্গে আমি পরিচিত হতে পারব। আমি নতুন কিছু শিখতে পারব”। ৩৪০০ বছর আগে ব্যাবিলনের “হুরিয়ান হাইম”কে প্রথম লোকগান হিসেবে ধরা হয়।
সেই প্রাচীন লোকগানের প্রবহমানতায় পরবর্তীকালে মহাকাব্যের গান, সমুদ্র অভিযানের গান, যুদ্ধের গান, ফসল কাটার গান ইত্যাদি লোকগান জন্ম নিয়ে প্রচার পেয়েছে । সেই সমস্ত গানের আবহে এবার বাংলার বাউল, পটের গান পেতে চলেছে বিশ্ব জুড়ে পরিচিতি।