এরপর বাড়ি থেকে লতিকাকে দেখাশোনা করেই বিয়ে দিয়ে দেয়। প্রায় ১৯ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল লতিকার। লতিকার বড় মেয়ে তখন কলেজের গণ্ডিতে পা দিয়েছে। তখন নতুন করে ইচ্ছা জাগে পড়াশোনা করার। এর পরেই প্রতিবেশীর সাহায্যে সে রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় মাধ্যমিকে ভর্তি হন। ঠিক সেই সময় তার ছেলে সৌরভ মণ্ডল ও মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এরপরই মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হয়ে লতিকা মণ্ডল ভর্তি হন নৃসিংহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। ছেলে সৌরভ মণ্ডল তখন মাধ্যমিকে কালনা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। যেহেতু তারা একই ক্লাসে পড়ে সেই কারণে একই সঙ্গে বাড়িতে পড়াশোনা করতে বসতো। নিজের সংসার সামলে পাশাপাশি প্রতিবেশী মানুষের বিভিন্ন কটুক্তি সহ্য করেও পড়াশোনা চালিয়ে যেত সৌরভ এবং লতিকা।
বুধবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরোনোর পর অনলাইনে ফল দেখতে গিয়ে জানা যায়, ছেলে এবং মা দুজনেই পাস করেছে। তবে মা লতিকা মণ্ডল ছেলের থেকে ৪০ নম্বর বেশি পেয়েছে। এ বিষয়ে লতিকা মণ্ডল বলেন, আমি ছেলের মুখ থেকে জানতে পারি যে আমরা দুজনেই পাস করেছি। তবে আমি ৩২৪ নাম্বার পেয়েছি। আর ছেলে ২৮৪ নাম্বার পেয়েছে। আমি যে ৪০ নম্বর বেশি পেয়েছি সেটা ছেলে পেলেই হয়তো ভালো হতো।আগামী দিনে আরও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান বলেই দাবি করেছেন লতিকা মণ্ডল।
তবে নিজে কম নম্বর পেয়েও মায়ের সাফল্যে যথেষ্ট খুশি সৌরভ মণ্ডল। তিনি বলেন মা এত ভালো ফলাফল করেছে এতে আমি মোটেও দুঃখিত নয়। আমরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে আগামী দিনে আরও উচ্চ শিক্ষিত হতে চাই।