নবদ্বীপে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর সহধর্মিনী বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর পরিবারের কাছে ঘরের জামাই। সেই ভাবনা থেকেই ষষ্ঠীতে আপ্যায়ন করা হয় জামাই হিসাবে গৌরাঙ্গকে। গৌরাঙ্গ পত্নী বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর পরিবারের গোস্বামী বংশের সদস্যরা ষষ্ঠীর সকালে জামাই গৌরাঙ্গকে বরণ করার সমস্ত আয়োজন করেন।
এদিন গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুকে জামাই বেশে সাজানো হয়ে থাকে। এবারে সুদূর পুরীর জগন্নাথ ধাম থেকে বিশেষ বস্ত্র আনা হয়েছিল মহাপ্রভুর জন্য। আর সেই বস্ত্র পরানো হয় ষষ্ঠীর সকালে। গরদের ধুতি আর পাঞ্জাবি। গায়ে উত্তরীয়। গলায় বিভিন্ন ফুলের মালা, হাতে ফুলের বালা আর মাথায় হলুদ রঙের পাগড়ি দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় মহাপ্রভুকে।
এই ভাবেই প্রথা মেনে ঘরের জামাই গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুকে জামাই আদর করা হয়। বৃহস্পতিবার জামাইষষ্ঠীর সকালে বিষ্ণুপ্রিয়ার পরিবারের গোস্বামী বংশের মহিলারা একে একে প্রথা মেনে ধান, দুর্বা, বাঁশ পাতা ইত্যাদি দিয়ে পাখার বাতাস দেন ঘরের জামাই গৌরাঙ্গকে।
নদিয়া নবদ্বীপ শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান। সারা বছর ঘরে ঘরে, মন্দিরে শ্রী চৈতন্য বিষ্ণুর অবতার রূপে পূজিত হন তিনি। তবে জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লা পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে তাঁকে ” জামাতা ” হিসাবে পুজো করা হয়। নবদ্বীপে মহাপ্রভু মন্দিরের সেবায়েতরা ঘরের মেয়ে বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর স্বামী হিসাবে তাঁকে পুজো করে এদিন অন্যরকম উৎসবে মেতে ওঠেন। বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর ভাই মাধবাচার্যের উত্তরপুরুষরা এদিনের এই অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
জামাই ষষ্ঠীর কারণে মহা ভোগের আয়োজন করা হয় এদিন। একাধিক ব্যঞ্জনের আয়োজন করা হয়। শ্রী মহাপ্রভুকে নিবেদন করা হয় শাক, থোড়, মোচা, শুক্ত, রকমারি তরকারি, ডাল, ভাজা, ছানার ধোকা, পনির ডালনা, পোস্ত সহ একাধিক পদ।
এর পাশাপাশি বিশেষ ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় আমের রস ক্ষীরের সঙ্গে মিশিয়ে প্রস্তুত করা হয় জামাইষষ্ঠী স্পেশাল আম ক্ষীর। সব শেষে দেওয়া হয় মশলা দেওয়া সাজানো পান। সব মিলিয়ে এদিন জমজমাট হয়ে ওঠে নবদ্বীপের ধামেশ্বর মহাপ্রভুর জামাই আদর অনুষ্ঠান।