মেধাবী এই পড়ুয়ার পরিবার সূত্রে খবর, ছোটবেলা থেকে কৈলাসের চোখের এই সমস্যা ছিল না। আর পাঁচটা ছেলের মত খেলাধুলা করতে ভালোবাসতো। প্রথমদিকে চোখের সমস্যা হওয়ায় তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে চিকিৎসক চশমা নেওয়ার পরামর্শ দেয়। সেই মতো কৈলাস চশমা নিলেও কোন উন্নতি হয় না। চশমার পাওয়ার বাড়তে থাকে। আর বর্তমানে আংশিক দৃষ্টিশক্তি নিয়ে জীবনের পথে এগিয়ে চলেছে কৈলাস পতি মাহাতো।
কৈলাস জানায়, ”ছোটবেলায় চোখে ভালো দেখতে পেলেও আস্তে আস্তে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। চিকিৎসকের কাছে গিয়েও কোন লাভ হয় না। নিজের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তখন গ্রাম থেকে উলুবেড়িয়ার আনন্দ ভবন ডেফ এন্ড ব্লাইন্ড স্কুলে চলে আসি। পঞ্চম শ্রেণী থেকে এখানেই আবাসিক থেকে পড়াশোনা করছি।” কৈলাস জানায়, ”দিনের বেলা কষ্ট করে বই পড়তে পারলেও চোখে খুব যন্ত্রণা হয়। তবে রাতের বেলা চোখে দেখতে না পাওয়ায় ক্যাসেট শুনে পড়াশোনা মুখস্ত করতাম। তবে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার জন্য নিয়ম করে কোন পড়াশোনা করতাম না। দিনের বেলা ছুটি পেলে পড়াশোনা করতাম। তবে যেটুকু পড়তাম মনোযোগ সহকারে পড়তাম। আবাসিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাকে খুব সাহায্য করেছে।”
কৈলাস জানায়, পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর বাড়িতে ফোন করেছিলাম। মা বাবা বোন খুব খুশি। তবে এখানেই থেমে থাকতে চায় না কৈলাস। নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে কাটবে আগামী দিনে শিক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চান বলে জানায় কৈলাস প্রতি মাহাতো। অন্য দিকে, কৈলাসের এই সাফল্যে খুশি আনন্দ ভবন ডেফ এন্ড ব্লাইন্ড স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অজয় দাস। তিনি জানান, কৈলাসের আংশিক দৃষ্টি শক্তি থাকায় খুব কষ্ট করেই পড়াশোনা করত। ওর এই সাফল্য অন্যান্য ছেলেমেয়েদের প্রেরণা যোগাবে বলে জানান অজয় দাস।