দক্ষিণরায়ের ডেরায় জল-জঙ্গল-জীবন নিয়ে এবার ইংরেজিতেও কথা বলবেন গাইডেরা… Empowering Eco-tourist guides of Sunderbans with English Language Training


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আজ, ২৭ মে শেষদিন। শুরু হয়েছিল দিনপাঁচেক আগে, ২২ মে। এই ক’দিন ধরে সুন্দরবন অঞ্চলের গাইডদের জন্য একটি দৃষ্টান্তমূলক ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কশপ। এই ধরনের ওয়ার্কশপ এখানে এই প্রথম। গুরুত্বপূর্ণ এই ওয়ার্কশপটি একযোগে আয়োজন করেছিল কলকাতার মার্কিন কনসুলেট জেনারেল, নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাসের ‘রিজিওনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গোয়েজ অফিস’, অলাভজনক সংস্থা ‘সোসাইটি ফর হেরিটেজ অ্যান্ড ইকোলজিক্যাল রিসার্চেস’ তথা ‘শের’ (Society for Heritage & Ecological Researches/SHER) এবং ‘সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ'(Sundarbans Tiger Reserve)। ৩৬ জন ইকো-ট্যুরিস্ট গাইড এতে অংশ নিয়েছিলেন। এখানে গাইডদের ইংরেজি ভাষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হল। পাবলিক স্পিকিং স্কিল তৈরির করার এই প্রশিক্ষণটি দিলেন ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ফেলো ম্যাডিসন ন্যুনিজ। 

আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘আমার কুড়মি ভাইয়েরা একাজ করতে পারে না’, বিজেপিকে নিশানা মমতার…

কেন সুন্দরবনের গাইডদের নিয়ে হঠাৎ এই ওয়ার্কশপ? কেন হঠাৎ তাঁদের পাবলিক স্পিকিং স্কিল তৈরির এই প্রশিক্ষণের আয়োজন?

আসলে সুন্দরবনে সারা বছরই পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। আর এক ধাঁচের পর্যটক তো নন তাঁরা। বিদেশি পর্যটকও থাকেন। তাঁরা এখানে পা দিয়ে এখানকার জলজঙ্গলের আদি ইতিহাস তথ্য কথা কাহিনি সবই স্থানীয় গাইডের মাধ্যমেই জানেন। কিন্তু জানার পথে একটা বাধা তৈরি করে ভাষা। তাঁরা বাংলা বোঝেন না আর স্থানীয় গাইডেরা ইংরেজিতে দড় নন। ফলে দীর্ঘদিন ধরে গাইড আর ট্যুরিস্টদের মধ্যে একটা কমিউনিকেশন গ্যাপ তৈরি হয়ে চলেছে। যেটা সুন্দরবনের প্রকৃতি ও ট্যুরিজম দু’য়ের পক্ষেই নেতিবাচক হয়ে উঠছে। 

এমনিতেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল সুন্দরবন ‘ওয়ার্ল্ডস মোস্ট ক্লাইমেট ভালনারেবল রিজিয়নসে’র একটি হিসেবে চিহ্নিত। ফলে সুন্দরবনে যাঁরা আসেন তাঁদের কাছে এই অঞ্চলের জলবায়ুসংক্রান্ত প্রকৃত স্টেটাসটা ঠিকঠাক ভাবে তুলে ধরাটাও গাইডদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। বস্তুত সুন্দরবনে এলে কোনও পর্যটকের পরিবেশগত আচরণ কেমন হওয়া দরকার এবং সেটা কেনই-বা তেমন হওয়া কাম্য, সেই বিষয়টা গাইডরাই ব্যাখ্যা করবেন। পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে এ অঞ্চলের রিসোর্স ও বন্যপ্রাণের সম্যক পরিচয়দান, এখানকার ফ্লোরা ও ফনার পরিচয়দান, স্থানীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পরিচয়প্রদানও জরুরি। অথচ, এই সব ধরনের কাজের ক্ষেত্রেই ভাষার দূরত্বই প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের খামতির দিকটাও রয়েছে। সামগ্রিক এই পরিস্থিতির বদলের জন্যই এমন কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের আয়োজন। 

আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: অভিষেকের কনভয়ে হামলা! ঝাড়গ্রামে আটক কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাত

‘প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কশপ ফর ইকো-গাইডস অফ সুন্দরবন’ শীর্ষক এই কোর্সটি ৬ দিনের।  সজনেখালি ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারির উল্টো পাড়ে এটির আয়োজন করা হয়েছিল। সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের ‘ফিল্ড ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ কনজারভেটর অফ ফরেস্ট’ আইএফএস অজয় দাস কর্মশালার শেষদিনে, অর্থাৎ, আজ ২৭ মে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনিই অংশগ্রহণকারীদের শংসাপত্র দেন। তিনি এই গোটা ভাবনাটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। আলাদা করে ধন্যবাদ জানান ‘শের’ এবং মার্কিন কনসুলেটকে।        

আশা করা যায়, এরকম ব্যতিক্রমী একটি ওয়ার্কশপ ও তার অংশ হিসেবে আয়োজিত ইংরেজি ভাষায় কথা বলার প্রশিক্ষণের সুফল আগামিদিনে মিলবে। সুন্দরবন আরও বেশি করে বিদেশি পর্যটকদের কাছে সহজবোধ্য হয়ে উঠবে। এখানকার আকাশ-মাটি-জল, এখানকার প্রকৃতি, এখানকার ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি এবং এখানকার মূলবাসীদের জীবনযাপন, তাঁদের সংকট– সমস্তটাই আরও বেশি করে এবং আরও প্রাঞ্জল ভাবে ভবিষ্যতের পর্যটকদের কাছে ‘কমিউনিকেটেড’ হবে। 

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *