শনিবার বাঁকুড়া শহরের কাটজুড়ি ডাঙায় রাঢ় অ্যাকাডেমি সভাকক্ষে ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলে’র ডাকে ৪০ টি সংগঠনের যৌথ আদিবাসী কনভেনশনে তিনি এই কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “কুড়মিরা কখনই আদিবাসী নয়। আদিবাসী সম্প্রদায়ভূক্ত হতে গেলে যে সাংবিধানিক শর্ত পূরণ করতে হয় সেক্ষেত্রেও তাঁরা ব্যর্থ।”
তারপরেও রাজ্য সরকার ওদের হয়ে কথা বলছে ও কুড়মিদের ST স্বীকৃতি দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এদিন, ভারতীয় আদিবাসী ভূমিজ সমাজের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক ধনঞ্জয় সর্দার বলেন, “স্বাধীনভাবে CIR রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে কিনা সেটা নিয়েও আমরা চিন্তিত রয়েছি। কোনও ধরণের কোনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই যেন সাংবিধানিক নীতি মেনে CIR রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় সেই দাবিও আমরা জানাচ্ছি। আমাদের দাবি পূরণ না হলে আগামী দিনে রাজ্য জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলন নামব আমরা। আদিবাসীদের বিরুদ্ধে যে চক্রান্ত হচ্ছে তা আমরা রুখে দেব।”
একথা এদিন উপস্থিত আদিবাসী সংগঠন গুলির নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে এদিন ওই আদিবাসী কনভেনশনে উপস্থিত ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল সহ অন্যান্য সংগঠন গুলির তরফে বন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়ির উপর হামলার তীব্র নিন্দা করা হয়। শুক্রবার রাতের ওই ঘটনার দায় আন্দোলনকারী ‘কুড়মি সমাজ’কেই নিতে হবে বলে তাঁরা দাবি করেন।
এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তাঁরা জানাচ্ছেন বলে জানান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জঙ্গলমহল এখন সাঁওতাল, মুণ্ডা, ভূমিজ, মাহাতোতে ভাগ হয়ে গিয়েছে। নিজেদের জাতির পরিচয় এতটাই তীব্র হয়েছে যে মাহাতোরা বাড়ির দেওয়ালে নাম-জাতি-ধর্ম সদর্পে লিখে রাখছেন।
আদিবাসীরা আবার বাড়িতে তুলেছেন নিজস্ব পতাকা। সাঁওতাল, মুণ্ডা বা ভূমিজদেরও আবার সমাজের পৃথক পতাকা। জঙ্গলের অন্দরে পতাকা আর দেওয়াল লিখনেই তাই প্রকট জাতি পরিচয়। যার প্রভাব পড়েছে ভোটেও। কারণ, তিন জেলার জঙ্গলমহলে কুড়মিদের জনসংখ্যা প্রায় ৩৫%। সাঁওতাল ২১%।
অন্যান্য জনজাতিরাও প্রায় ১০%। কুড়মি সমাজ ‘জনজাতি’ হতে আন্দোলন করছে। আর জনজাতি সমাজ কুড়মিদের ঠেকাতে কৌশলে নেমেছে। আর এই কারণেই আদিবাসী ও কুড়মি সমাজের মধ্যে বিরোধ বাঁধছে রাজ্য জুড়ে।