শুক্রবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ বহরমপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে বিপ্লব-সহ সাত জনকে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিন ধৃতদের বহরমপুর জেলা জজ আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
বৃহস্পতিবার রাতে জাইদুল হক নামে এক তৃণমূল কর্মী শ্বাসকষ্টের সমস্যায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে ভর্তি হন। রাতে তাঁর সঙ্গে হাসপাতালে হাজির হন একাধিক তৃণমূল কর্মী। ওই রোগীর অক্সিজেনের প্রয়োজন না হলেও তাঁর সঙ্গে থাকা তৃণমূল কর্মীরা অক্সিজেন দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের চাপ দেন বলে অভিযোগ। এরপরেই তৃণমূল নেতা বিপ্লব কুন্ডুর নেতৃত্বে মেডিক্যাল কলেজে শুরু হয় তাণ্ডব।
কর্তব্যরত চিকিৎসকদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। নার্সদেরও গালিগালাজ করা হয়। চিকিৎসকদের অভিযোগ, হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে হাজির হওয়া সকলেই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। খবর পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে বিপ্লব কুণ্ডু-সহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক আকাশদীপ ঘোষ বলেন, ‘ওই রোগীকে ভর্তি করে নেওয়া হলেও তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন অক্সিজেন দেওয়ার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন। আমরা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও তাঁরা কোনও কথা শোনেননি। এই নিয়ে বচসা শুরু হয়। হঠাৎ-ই আমাদের মারধর করতে শুরু করেন। প্রত্যেকেই মদ্যপ অবস্থায় ছিল।
এই ঘটনায় আমরা আতঙ্কে আছি।’ মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি অনাদি রায়চৌধুরী বলেন, ‘কর্তব্যরত একাধিক চিকিৎসককে মারধর করা হয়েছে। একজন নিরাপত্তারক্ষীর হাত ভেঙে গিয়েছে। নার্সদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ বহরমপুর থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা এই ঘটনা বরদাস্ত করব না।
সমস্ত চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছি। আমরা চাই, যারা অভিযুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’ অভিযুক্ত বিপ্লব কুণ্ডু আদালতে যাওয়ার পথে বলেন,’আমাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। একজন রোগীকে ওষুধ না দেওয়ার জন্য অভিযোগ করাতেই জুনিয়ার ডাক্তাররা আমাদের মারধর করেন। আমার মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে সত্যি ঘটনা জানা যাবে।’ মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কমিটির সদস্য তথা জেলা কিষান খেত মজুর সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মাতিন বলেন, ‘দলগত ভাবে আলোচনা করে গোটা ঘটনার তদন্ত করা হবে।’