নেটিজেনদের একাংশের প্রশ্ন, নিয়োগ দুনীর্তিতে যখন রাজ্যের একাধিক রাজনৈতিক নেতা ও শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা জেলবন্দি, সেখানে প্রেরণার বক্তব্যের মধ্যে ভুলটা কোথায়? কেনই সদ্য উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ কৃতী ছাত্রীকে এভাবে আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে?
‘ছোট্ট’ মেয়েটির মেধা কি কোথাও খাটো করে দেখানো হচ্ছে না? এই প্রসঙ্গে কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী এই সময় ডিজিটালকে বলেন, ‘প্রেরণার ভালো রেজাল্ট করেছে, এর জন্য তাঁকে শুভ কামনা। কিন্তু প্রেরণার মন্তব্য কাম্য ছিল না। যাঁরা ভালো ফল করেছে তাতে কন্যাশ্রীর একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। সবুজ সাথীর সাইকেল বা সরকারের দেওয়া ট্যাবও ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করতে সাহায্য করেছে। কোনও বিষয়ে সমালোচনার করার অধিকার রয়েছে, কিন্তু এই বক্তব্য রাজনৈতিক নেতানেত্রীর মতো। উনি যদি সিপিএম বা এসএফআইয়ের কর্মী হিসেবে এই বক্তব্য রাখেন, তাহলে কিছু বলার নেই। কিন্তু উনি যদি উচ্চমাধ্যমিক কৃতী হিসেবে একথা বলে থাকেন তবে আমি জানতে চাই উনি কী রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন? যদি পেয়ে থাকেন তবে কেন তা প্রত্যাখ্যান করেননি?’
যাঁর সঙ্গে প্রেরণার ছবি নিয়ে বিতর্ক, সেই সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘বোধবুদ্ধিহীনরা এটা নিয়ে লাফাচ্ছে। একটি বাচ্চা মেয়ের অভিব্যক্তি যাঁরা বোঝে না, তাদের কথার কী উত্তর দেব! বরাবরই রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে আমি যাই। অনেক তৃণমূল পরিবারে ছাত্রকেও শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছি। যদিও সেটা কম,. কারণ বামপন্থী ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার প্রতি ঝোঁক বেশি। আমি খুব খুশি বাস্তব বিবেচনা করে স্বাভাবিক ও সাবলীল ভঙ্গিতে প্রেরণা বাস্তবটা তুলে ধরেছে।’
কলকাতা পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী এই নিয়ে বলেন, ‘আমি জানি অরূপ চক্রবর্তীর একজন সংস্কৃতিবান মানুষ। কিন্তু অসৎ সঙ্গের সাইড এফেক্টে উনি এই কথা বলেছে। প্রেরণা ওঁর মেয়ের সমান। প্রেরণা যদি বলতেন ‘এই দেশ আমার নয়’, তবে অরূপবাবু খুশি হয়ে বাহবা জানাতেন। এটা নির্লজ্জতার প্রতিচ্ছবি। অরূপদার মতো মানুষের থেকে এই ধরনের কথা অপ্রত্যাশিত। কারও সঙ্গে কারও ছবি বেরলেই এই ধরনের আক্রমণ অনুচিত। আজকাল প্রজন্ম অনেক এগিয়ে। প্রেরণার এত বড় সাফল্যের পরও একটি মন্তব্যের জন্য যদি তাঁকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়, তবে আমিও সুর মিলিয়ে বলছি ‘এই রাজ্য আমার নয়’।’