দুই বিশ্বযুদ্ধেই অংশ নেওয়া মার্কিন শহিদের দেহাবশেষ প্রায় ৬০ বছর পরে ফিরছে স্বদেশের মাটিতে…Decorated American Officer Major General Harry Kleinbeck Picketts Last Remains to Head Home After almost sixty Years


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: স্বদেশের মাটিতে ফিরছে এক দেহাবশেষ, যে-দেহের মৃত্যু হয়েছে ১৯৬৫ সালের মার্চে, কিন্তু যার স্মৃতি আজও মৃত্যুহীন! ‘ফিরে চল মাটির টানে’? নাকি এ প্রায় ”ও আমার দেশের মাটি তোমার ‘পরে ঠেকাই মাথা”! অথবা বিষয়টা হয়তো এতটা সরলরৈখিক নয়। এখানে আছে বীররস ও করুণরসের মিলিত প্রবাহ। কেন বীররস? কেন করুণরস? বীররস, কারণ, এখানে যাঁকে ঘিরে কাহিনি, তিনি, মেজর জেনারেল হ্যারি ক্লেইনবেক পিকেট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা, দেশের হয়ে লড়েছেন প্রথম ও দ্বিতীয় দুই বিশ্বযুদ্ধেই। করুণরস, কেননা তাঁর দেহাবশেষ এবার ফেরানো হচ্ছে সেই মাটিতে, একদিন যে-মাটির জন্য তিনি জীবনপাত করে লড়াই করেছেন। আজ, ২৯ মে একটি প্রেস রিলিজের মাধ্যমে তাঁর দেহাবশেষ ভারত থেকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার খবরটি জানিয়েছে কলকাতার মার্কিন কনসুলেট জেনারেল।

আরও পড়ুন: Poet Muhammad Iqbal: ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা’র কবি ইকবালকে কি বাদ দেওয়া হচ্ছে সিলেবাস থেকে? 

মেজর জেনারেল হ্যারি ক্লেইনবেক পিকেটকে সমাহিত করা হয়েছিল দার্জিলিংয়ে। সেই দেহাবশেষ এবার রি-বারিয়ালের জন্য যাচ্ছে আমেরিকার আর্লিংটন ন্যাশনাল সিমেট্রিতে। হ্যারি ক্লেইনবেক পিকেটের পরিবারের পক্ষে এ এক বিশেষ মুহূর্ত, খুবই আনন্দের মুহূর্ত, নতুন করে প্রিয়জনের স্মৃতি আঁকড়ে ধরার মরমি মুহূর্ত। ঠিক যেখানে এসে আবার মিশে যায় বীররস ও করুণরসের ধারা।

কলকাতার মার্কিন কনসুলেটের তরফে বলা হয়েছে, মেজর জেনারেল পিকেটের স্মৃতি-অবশেষ তাঁর প্রিয় পরিবারের হাতে তুলে দেওয়াটা এখন আমাদের কাছে একটা অগ্রাধিকার। মেজর জেনারেল তাঁর দেশের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়াই করেছেন। ভারত সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার উভয়ই যে-ভাবে মেজরের স্মৃতি-অবশেষ তাঁর দেশে ফেরানোর জন্য আমাদের সাহায্য করেছেন সেজন্য এদের কাছে আমি এবং আমার টিম গভীর ভাবে কৃতজ্ঞ। 

আরও পড়ুন: জঙ্গলের ভিতরে ৫০০০ বছরের পুরনো সভ্যতা! কী ভাবে খোঁজ মিলল?

মেজর জেনারেল পিকেট ইউনাইটেড স্টেটস মেরিন কর্পসে ছিলেন ১৯১৩ সালে। দুটি বিশ্বযুদ্ধেই তিনি দেশের হয়ে যুদ্ধ করেছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ১৯১৭ সালে তিনি জার্মান ক্রুজার আক্রমণে ছিলেন। এর ২৪ বছর পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তিনি জাপানে পার্ল হারবার আক্রমণকারী দলে কম্যান্ডিং অফিসার ছিলেন। ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর পার্ল হারবারে যে সারপ্রাইজ অ্যাটাক হেনেছিল আমেরিকা, তা ঘটেছিল মেজর জেনারেল পিকেটের হাত দিয়েই।

কলকাতার মার্কিন কনসুলেটের একটি ইউনিট ‘দ্য আমেরিকান সিটিজেনস সার্ভিস’ (এসিএস), যারা মেজর জেনারেল পিকেটের দেহাবশেষ ফেরানোর পুরো বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছে। তারাই দার্জিলিংয়ের ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমস্ত যোগাযোগ রক্ষা করেছে। কবর থেকে পুরনো দেহাবশেষ তোলা ও তা নতুন করে সমাধিস্থ করার মতো করে প্রস্তুত করে তোলার কঠিন কাজটির ব্যবস্থাপনায় ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের হোম অ্যান্ড হিল দফতরের বিশেষ সচিব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের তরফে ভারতের তথা পশ্চিমবঙ্গের এই সব স্তরকেই যথোচিত কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদে অভিসিঞ্চিত করা হয়েছে।

কলকাতার মার্কিন কনসুলেটের তরফে মেলিন্ডা পাভেক শেষে বলেছেন, দুটি দেশের নাগরিকদের সাহায্যে যখন দুটি দেশই এগিয়ে আসে, তখনই আসলে দু’দেশের বন্ধুত্ব বা সহাবস্থান আরও জোরদার হয়। মেজর জেনারেল পিকেটের দেহাবশেষ ফেরানোর কাজটা আমাদের তরফে একটা বড় সাফল্য। যে-সাফল্য অর্জন করতে আমাদের প্রভূত সাহায্য করেছে ভারত।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *