সাগরদিঘি উপনির্বাচনের তিন মাসের মধ্যে বায়রন বিশ্বাস তৃণমূলে যোগদান করায় কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ মঙ্গলবার জোড়াফুলের সমালোচনা করে টুইট করেন। বায়রনকে তৃণমূল প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে জয়রাম বলেন, ‘এটা সাগরদিঘির জনমতের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিশ্বাসঘাতকতা। আগেও গোয়া, মেঘালয়, ত্রিপুরাতে এই ভাবে কংগ্রেসের ঘর ভাঙানো হয়েছে। এই কাজ বিরোধী ঐক্যকে মজবুত করবে না বরং বিজেপির উদ্দেশ্য সিদ্ধ করবে।’
বায়রনের তৃণমূলে যোগদান বিজেপি বিরোধী ঐক্যে প্রভাব ফেলবে বলে জয়রাম মনে করলেও নবান্নে এ দিন মমতা বলেন, ‘আমি মনে করি জাতীয় স্তরে আমরা একসঙ্গে রয়েছি। সকলের বোঝা উচিত রাজ্যস্তরে আঞ্চলিক দলের নিজস্ব বাধ্যবাধকতা থাকে। গোয়া, মেঘালয়ে আমরা লড়াই করেছিলাম। কিন্তু কংগ্রেস যখন রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, হিমাচলপ্রদেশে লড়াই করেছিল, তখন আমরা তাঁদের ডিসটার্ব করিনি। আমরা ডিসটার্ব না করে (কংগ্রেসকে) সমর্থন করেছিলাম। এটা ঠিক একজন বিধায়ক যোগ দিয়েছে, কিন্তু দেশের অন্য জায়গায় তো আমরা (কংগ্রেসের কাছে) আসন চাইনি।’
কেন্দ্রে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারে জয়রাম রমেশের সঙ্গে মমতাও মন্ত্রী ছিলেন। রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ বৃত্তে থাকা এই পোড়খাওয়া কংগ্রেস নেতা টুইটে তৃণমূলের উদ্দেশে কড়া মন্তব্য করলেও মমতা কিন্তু পাল্টা তাঁকে কোনও কড়া বিবৃতি দেননি। তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘জয়রাম রমেশ তৃণমূলকে নিয়ে এই সব কথা বলেছেন, আমি তাঁকে শুধু ধন্যবাদ জানাই। আমার সমালোচনা যাঁরা করবে, আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।’
প্রসঙ্গত, পাটনার আসন্ন বৈঠকে কংগ্রেস নেতৃত্বের থাকার কথা রয়েছে। গোয়া, মেঘালয়, ত্রিপুরায় কংগ্রেস নেতাদের তৃণমূল ভাঙিয়েছে বলে জয়রাম অভিযোগ করলেও মমতার যুক্তি, তৃণমূলের জাতীয় দলের মর্যাদা রক্ষা করতেই জোড়াফুল এই রাজ্যগুলিতে ভোটে লড়াই করতে গিয়েছিল। মেঘালয় নির্বাচনের সময়ে রাহুল গান্ধী তৃণমূলকে বিজেপির বি-টিম বলে চিহ্নিত করেছিলেন। তখন তৃণমূল রাহুলকে কড়া জবাব দিয়েছিল।
তৃণমূল গোয়া, মেঘালয়ে বিজেপি-বিরোধী ভোট ভাগ করতে গিয়েছিল বলে কংগ্রেস নেতারা মনে করলেও মমতা এ দিন বলেন, ‘কংগ্রেস-বিজেপিই কি শুধু জাতীয় দল থাকবে? চার-পাঁচটি রাজ্যে আমরা জয়ের জন্য লড়াই করিনি, শুধু ভোটের শতাংশ বৃদ্ধির জন্য লড়াই করেছিলাম। যার মাধ্যমে আমরা জাতীয় দল হতে পারব। ২০২৬ সাল পর্যন্ত মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন আমাদের জাতীয় দলের মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে। আমরা চাই তিন-চারটি রাজ্যে আমাদের কিছু ভোট থাকুক, যাতে জাতীয় দলের মর্যাদা অটুট থাকে।’
যে বায়রনের দলবদল নিয়ে বিতর্ক, সেই সাগরদিঘির বিধায়কের তৃণমূলে যোগদান খবরের কাগজ পড়ে জানতে পারেন বলে মমতার বক্তব্য। বায়রনের দলবদলের পিছনে তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্বের ভূমিকা রয়েছে বলে এ দিন মমতা জানান। তিনি বলেন, ‘আমি এগুলো করি না। দলের নানা রকম পদ্ধতি রয়েছে, ব্লক লেভেল এই কাজ করে, এই বিষয়ে ব্লক লেভেল নেতৃত্বকে জিজ্ঞেস করুন।’