Sadhan Chakraborty : যাদবপুরে সাধন যোগ দিতে পারলেন না, বাড়ল জটিলতা – jadavpur university authorities did not officially give sadhan chakraborty permission to join the work


জয় সাহা
ছোটগল্প সম্পর্কে বলা হয়, ‘শেষ হয়ে হইল না শেষ’। তার সঙ্গে এখন অনেকেই মিল খুঁজে পাচ্ছেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য প্রাক্তন উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর ঘটনা পরম্পরার। কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব ছাড়ার পর সাধন যোগ দিতে চান তাঁর পুরোনো কর্মক্ষেত্র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে। কিন্তু এ বার বেঁকে বসেছে যাদবপুর। এখনও পর্যন্ত কাজে যোগ দেওয়ার ছাড়পত্র সরকারি ভাবে সাধনকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেননি, উল্টে বিভিন্ন ব্যাখ্যা চেয়ে সাধনকেই উকিলের নোটিস ধরানো হয়েছে।

Bratya Basu : রিপোর্ট নিয়ে তলবি চিঠি বোসের, ফের প্রশ্ন ব্রাত্যর
অভিযোগ, প্রথমত, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদ থেকে সাধন সঠিক সময়ে পদত্যাগ করেননি আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও। দ্বিতীয়ত, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্যের সেক্রেটারিয়েট চালানো জন্য ২২ লক্ষ টাকার বেশি অ্যাডভান্সও নিয়েছিলেন সাধন এবং তার হিসেব তিনি দেননি, এমনটা অভিযোগ। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টের এটিএম কার্ড, বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া চার কামরার ফ্ল্যাট, গাড়ি সাধনের কব্জায় বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার এরই মধ্যে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের আইনজীবী চিঠি দিয়েছেন সাধনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে।

CV Ananda Bose Bratya Basu : আনন্দের শো-কজের মুখে বহু উপাচার্য, ক্ষুব্ধ ব্রাত্য
সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সাধনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে চিঠি দিয়েছেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, এমন সব অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, তিনি যেন খুব সহজে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে না-পারেন। কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধন যে সব জট এখনও পাকিয়ে রেখেছেন বলে অভিযোগ, সেই সব জট ছাড়ার আগেই তাঁকে কাজে যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলে আইনি জটিলতায় ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, এমনটা জানিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছে শিক্ষক সংগঠন জুটা-ও।

Kazi Nazrul Islam: রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যায় বিদ্রোহী কবির ছবি সরানোর ফতোয়া, বিতর্কের মুখে ক্ষমাপ্রার্থনা মন্দির কমিটির
এই পরিস্থিতিতে গত শনিবার যাদবপুরে গিয়েও জয়েন করতে পারেননি সাধন। তিনি জয়েন করবেন, এমনটা জানিয়ে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস এবং রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে চিঠি লিখে এসেছেন। এই বিষয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে সাধনের কাছ থেকে তাঁর আগের কর্মস্থলের জটিলতা সংক্রান্ত ব্যাখ্যা চেয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার সদুত্তর না-পাওয়া পর্যন্ত সাধন চক্রবর্তীকে যাদবপুরে যোগ দিতে দেওয়া হবে না বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর।

Calcutta University Admission 2023 : ঝক্কির দিন শেষ, এবার কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কলেজে ভর্তি সুবিধা
গত কয়েক মাস ধরে সাধনকে নিয়ে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলনে ক্যাম্পাস কার্যত অচল করে রেখেছিলেন একদল শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী। কিছু দিন আগে সাধনকে উপাচার্য পদ থেকে বরখাস্ত করেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু রাজ্যপালের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন সাধন। রাজ্যপালের দেওয়া বরখাস্তের চিঠিকে আদালত মান্যতা দেয়নি। কিন্তু আদালতেই সাধন জানান, তিনি পদত্যাগ করবেন। আবার সময়ের মধ্যে সেই পদত্যাগপত্র না-পাওয়ায় রাজ্যপালের আইনজীবী আদালত অবমাননার অভিযোগে সরব হয়েছেন।

যাঁকে নিয়ে এত কাণ্ড, সেই সাধন চক্রবর্তীর অবশ্য বক্তব্য, ‘যদি কোনও সমস্যা হয়ে থাকে, তা হলে সেটা কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ও আচার্যের অফিসের মধ্যে। এটা যাদবপুরের তো কোনও ব্যাপার নয়। ওঁরা আমাকে আইন অনুযায়ী জয়েন করাতে বাধ্য। আমি ইতিমধ্যে যাদবপুরের চিঠিরও জবাব দিয়েছি।’ সাধন আবার একই সঙ্গে বিকাশ ভবনে শিক্ষা দপ্তরের কর্তাদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন, উপাচার্য হিসেবে তাঁর মেয়াদ সরকারি ভাবে কবে শেষ হয়েছে?

Presidency University : টয়লেটে লুকিয়ে ছাত্রীর ছবি: কড়া ব্যবস্থা নিল প্রেসিডেন্সি
মেয়াদ শেষের পরেও কি তাঁকে আলাদা করে পদত্যাগপত্র পাঠাতে হবে? সাধন জানান, তার উত্তর এখনও আসেনি। রাজ্যপাল প্রসঙ্গে সাধনের বক্তব্য, ‘আদালতের নির্দেশ মতো, আমাকে বরখাস্ত করার চিঠি রাজ্যপালকে প্রত্যাহার করতে হতো ১৮ মে-র মধ্যে। কিন্তু তিনি সময়ের মধ্যে তা করেননি। ফলে, আদালত অবমাননার অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে নয়, রাজ্যপালের ক্ষেত্রেই বেশি প্রযোজ্য।’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘আমি যদি টাকার নয়ছয় করে থাকি, তা হলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাকে চিঠি পাঠিয়ে কেন সব জানতে চাইছে না?’ ফলে, আগামী দিনে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রাক্তন এই উপাচার্য। অর্থাৎ, সাধন-উপাখ্যান এখনও শেষ নয়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *