World No Tobacco Day : তামাকে আসক্তিই এখন বড় অসুখ – doctors are teaching special awareness lessons about tobacco on world no tobacco day


অনির্বাণ ঘোষ
এই সময়: দেশে সবচেয়ে বড় ব্যাধি এখন কোনটা? অনেকেই বলবেন, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবিটিস। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, না। এগুলোয় ভোগেন যথাক্রমে দেশের ২৫% ও ৯% মানুষ। কিন্তু প্রায় ২৯% মানুষ ভোগেন একটি নিউরো-সাইকিয়াট্রিক সমস্যায়। সেটি হলো তামাকের আসক্তি। ডাক্তারি পরিভাষায়, নিকোটিন ডিপেন্ডেন্স সিন্ড্রোম (এনডিএস)।

Calcutta Medical College : জলবসন্ত নিয়েও অস্থিমজ্জার প্রতিস্থাপন, দাদাকে বাঁচাল ভাই
তাই আজ, বুধবার বিশ্ব তামাক বর্জন দিবসের প্রাক্কালে চিকিৎসকরা বলছেন, ইচ্ছাশক্তিতে তামাক বর্জন করতে না-পারলে ডাক্তারবাবুর দ্বারস্থ হওয়াই মঙ্গল। ডি-অ্যাডিকশন চিকিৎসায় সহজে উইথড্রয়াল সিনড্রোম এড়িয়ে স্বচ্ছন্দে তাড়ানো সম্ভব তামাকের আসক্তি। নিউরোসাইকিয়াট্রি বিশেষজ্ঞ দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আসক্ত ব্যক্তির নেশা ছাড়ার ইচ্ছা ও মনোবল এবং ডাক্তারের কাউন্সেলিং, ওষুধ ও নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির (এনআরটি) মিশেলে তামাক বর্জনের কাজটা খুবই সহজ।’

Covid New Wave : চিনে ফের কোভিড সুনামি, কতটা বিপদে বিশ্ব? জবাব বিশেষজ্ঞদের
যদিও দেবাঞ্জন মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আসক্তের তামাক বর্জনের ইচ্ছেটাকে বাস্তবায়িত করতে এনআরটি সাহায্য করে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে। কিন্তু তাঁর আক্ষেপ, এ নিয়ে তেমন সচেতনতা নেই। অথচ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সুজিত সরখেল বলছেন, ‘আর পাঁচটা আসক্তির মতো এনডিএস-ও আদতে একটি স্নায়বিক ও মানসিক সমস্যা। কাউন্সেলিং ও চিকিৎসায় তা সারেও।’ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সমীক্ষা বলছে, এ দেশে নিকোটিন ডিপেন্ডেন্স সিন্ড্রোম প্রায় মহামারীর পর্যায়ে, যার ধারেকাছে অন্য কোনও রোগভোগ নেই।

Blood Sugar: মিরাক্যাল! ব্লাড সুগার ২৬৫৬, মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরল যুবক
সাম্প্রতিক গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভের রিপোর্ট বলছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার ২৮.৬% তামাকের নেশায় আসক্ত। এ ক্ষেত্রে পুরুষরা (৪২.৪%) প্রায় তিন গুণ এগিয়ে মহিলাদের (১৪.২%) থেকে। আসক্তির মধ্যে যেমন রয়েছে ধূমপান, তেমনই আছে গুটখা, খৈনি, জর্দা, গুড়াখুর মতো ধোঁয়াবিহীন তামাকের নেশাও। সংখ্যার বিচারে তামাক আসক্তিতে দুনিয়ায় এ দেশই শীর্ষে। বিশেষজ্ঞদের আক্ষেপ, ইউরোপ-আমেরিকায় জনপ্রিয় হলেও নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি এ দেশে এখনও কল্কে পায়নি।

Medical Negligence : ৭ হাসপাতাল ঘুরে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু যুবকের
তামাক বর্জন যোদ্ধা তথা ইংল্যান্ড প্রবাসী চিকিৎসক চিত্ত চৌধুরীর বক্তব্য, ‘সব চিকিৎসকই রোগীকে তামাক ছাড়তে বলেন, কিন্তু সহজ রাস্তাটা চিনিয়ে দেন না।’ একমত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তীও- ‘আর পাঁচটা আসক্তির মতো তামাকের আসক্তিতেও তামাক নেওয়ার অভ্যাসটা ক্রমাগত বেড়েই চলে টলারেন্সের জন্য। কমাতে বললে তাঁরা কমান না। ফলে তামাক নেওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে শুধুমাত্র নিকোটিন রিপ্লেস করে এবং ধীরে ধীরে তার ডোজ় কমিয়ে নেশামুক্তি ঘটানো হয়।’

Disease X Pandemic : ডিজ়িজ-এক্স হবে কোন অসুখ, চিন্তায় বিশেষজ্ঞরা
শর্মিষ্ঠা জানান, ঘোর নেশাখোরদের শরীরে প্রতি দেড় ঘণ্টায় যেখানে অন্তত ৪ মিলিগ্রাম নিকোটিন ঢোকে, সেখানে এনআরটি-তে বড়জোর ২ মিলিগ্রাম নিকোটিন দেওয়া হয় গাম বা প্যাচের মাধ্যমে। পরে সেটাও লাগাতার কমানো হয়। সঙ্গে চলে উইথড্রয়াল সিন্ড্রোম মোকাবিলার কিছু ওষুধও। তাঁর কথায়, ‘উত্তেজনা, উদ্বেগ, অবসাদ, মানসিক চাপে নিকোটিনের চাহিদা বেড়ে যায় শরীরে। নেশামুক্তির চিকিৎসায় সেই দিকগুলোরও খেয়াল রাখা হয়।’ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় গর্গ জানাচ্ছেন, তামাকের আসক্তি সরাসরি প্রভাব ফেলে স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্কে। তাই এই আসক্তি কাটানো মুশকিল। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাহায্য নিলে কাজটা আসান হয়ে যায়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *