আর নিজের স্বপ্নকে সঙ্গে নিয়ে পারিবারিক আর্থিক অস্বচ্ছলতার মাঝেও এবার উচ্চমাধ্যমিকে কৃতিত্বের নিদর্শন রাখল উলুবেড়িয়া করাতবেড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী হাসিমা খাতুন। হাসিমা এবার ৪৫০ নম্বর পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছে। বাংলায় ৭৩, ইংরেজিতে ৮৭, শিক্ষা বিজ্ঞানে ৯৩, ইতিহাসে ৯৪, রাষ্ট্র বিজ্ঞানে ৯৪ ও দর্শনে ৮২ পেয়েছে হাসিমা। তিন ভাই বোনের মধ্যে ছোটো হাসিমা।
বাবা রঙ মিস্ত্রির কাজ করে কোনওরকমে সংসার চালান। আর বাবার মুখে হাসি ফোটানোই হাসিমার অন্যতম লক্ষ্য। তাঁর কথায়, “মাধ্যমিক না দিতে পারার একটা আক্ষেপ ছিল। তাই নিজের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলাম উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করে দেখাব।
তাই সেইমতো পড়াশোনাও করেছিলাম। তারপরেই এই সাফল্য”। হাসিমা আরও জানিয়েছে, “আমার এই লড়াইয়ে পরিবারের পাশাপাশি শিক্ষক তরুণ কুমার ধাড়া ভীষণভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে আমাকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া, বই, খাতা দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্নভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি”।
স্বভাবে লাজুক হাসিমা জানিয়েছে, আপাতত তাঁর লক্ষ্য উচ্চশিক্ষার দিকে। আপাতত সে ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। অন্যদিকে শিক্ষক তরুণ কুমার ধাড়া বলেন, “হাসিমার মতো পড়ুয়ারা আমাদের সমাজের গর্ব। তাঁদের পাশে থাকতে পেরে আমিও গর্বিত। তবে আমি বিশেষ কিছুই করিনি।
যা কর্তব্য করার করেছি। হাসিমা নিজে পড়াশোনা করে, খেটে আজ এই ফল পেয়েছে। হাসিমার জন্য শুধু স্কুল নয়, এই গোটা এলাকাই গর্বিত”। তবে এবার কিছুটা চিন্তায় রয়েছে হাসিমার পরিবার। কারণ আর্থিক অস্বচ্ছলতা।
কারণ কলেজ ও তারপর উচ্চ শিক্ষাতে যে খরচ কিছুটা বাড়তে চলেছে। তবে হাসিমার আশা, কোনও কিছুই তাঁর উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। কারণ নিজে বড় হয়ে বাড়ির এই আর্থিক দুর্দশাই দূর করতে চায় সে।