হাওড়ার বালির বাসিন্দা বছর বত্রিশের বিবাহ বিচ্ছিন্না মহিলার দুই সন্তান আছে। গত বছর ফেসবুকে তাঁর আলাপ হয় বাঁকুড়ার ঘটকপাড়ার যুবক মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। দুজনে বিয়ে করবেন ঠিক করেন। গত বছর অগাস্ট মাসে উত্তরপাড়া ভদ্রকালীর পানপারায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন তারা। সেখানেই দুই নাবালক সন্তানকে নিয়ে চলে আসেন মহিলা।
মানস ফ্ল্যাটে মাঝে মধ্যে আসতেন। মহিলার অভিযোগ, মানসের পরিবার বাঁকুড়া থেকে উত্তরপাড়া এসেছেন। তাঁদের উপস্থিতিতে বিয়ের কথা হয়েছে। ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের কাছ থেকে ফর্মও তোলেন তারা। মহিলার অভিযোগ, এরপর থেকেই অদ্ভুত আচরণ শুরু করেন তার প্রেমিক। কয়েকবার জোর করে তাঁর গর্ভপাত করানো হয়।
গত ৪ ঠা মে সকালে মানসের পরিবার উত্তরপাড়ায় আসেন। সেদিন তাঁকে অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়। এমনকি গলায় ফাঁস দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। দু’জনের সম্পর্কের ইতি হয় সেদিনই। এর পর মহিলা উত্তরপাড়া থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে অভিযোগ নেওয়া হয়নি।
পরে ২০ মে শ্রীরামপুর ডিসির সাহায্যে শ্রীরামপুর মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মহিলা। মানস ছাড়াও তার গোটা পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়। গতকাল বাঁকুড়া থেকে অভিযুক্ত মানস বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার দাদা তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নির্যাতিতা মহিলা বলেন, যখনই বিয়ের কথা বলতাম এড়িয়ে যেত। একাধিক বার গর্ভপাত করতে বাধ্য করে। পরে বিয়ের জন্য চাপ দিই। তখন দেখানোর জন রেজিষ্ট্রি ফর্মে সই করে। একদিন ওর মা বাবা দাদা বৌ কাকু এসে মারধর করল। মানসকে নিয়ে চলে গেল। তারপর থেকে আর ফোন ধরে না। ধরলেও চিনতে পারে না। একদিন ওর মা ফোনে বলে, ছেলের অন্য জায়গায় বিয়ে দেবে।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্তের পরিবারের কাছ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুরো ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত জানা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তের কড়া শাস্তির ব্যাপারে আবেদন জানিয়েছেন ওই মহিলা।