Coromandel Express Derailment : কেরালায় কাজে যাওয়ার জন্য করমণ্ডল এক্সপ্রেসে করে রওনা দিয়েছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের গাঁও গঙ্গারামপুর গ্রামের চন্দন রায়। চন্দনের সঙ্গে ছিলেন তার আত্মীয় নিত্যম রায়। তাঁর বাড়ি মালদার বামনগোলায়। গতকাল শেষবারের মতো তাঁদের ফোনে কথা হয় পরিবারের সঙ্গে। তারপর আর কথা হয়নি চন্দনের সঙ্গে। এদিকে গতকাল বিষয়টি জানার পর থেকে শোকস্তব্ধ এলাকা। কান্নায় ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। শনিবার সকালেই পরিবারের তরফে তপন থানায় লিখিত নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় তপন থানার পুলিশ।
অন্য দিকে হরিরামপুরের দুজন প্রথমে নিখোঁজ থাকলেও তাদের পরে খোঁজ মেলে। দুজনে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার কেরালার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। দুজন ওখানে শ্রমিকের কাজ করেন। ওই বিকেল তিনটের পর করমণ্ডল এক্সপ্রেসে রওনা দেওয়ার পর বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল।
তারপর থেকে তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা যায়নি। ঘটনার পর তার আত্মীয় নিত্যম রায়ের ফোনের যোগাযোগ করা হয়েছিল। সেখানে কোনও একজন হিন্দিভাষী ব্যাক্তি ফোন তুলে বলেন নিত্যমের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু চন্দন রায়ের কোনও খবর এখনও পাওয়া যায়নি। আশঙ্কায় রয়েছে পরিবার। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন চন্দন রায়ের পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনার খবর পেয়ে এদিন সকালে ঘটনাস্থলে আসে তপন থানার পুলিশ। এবং আসেন BJP-র স্থানীয় নেতারা। BJP-র পক্ষ থেকে ওই পরিবারকে সবরকম ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতে আরও অনেক নিখোঁজের খবর মিলছে। পুরো বিষয়ের উপর নজর রাখা হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে চন্দনের মা জানান, “আমার ছেলে ও আত্মীয় নিত্যম রায় কাজের সূত্রে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে করে যাচ্ছিল। রওনা দেওয়ার সময় ফোন করে বলেছিল আমরা রওনা দিয়েছি। তারপর আমরা যখন খবরে শুনতে পাই যে করমণ্ডল ট্রেনটি অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে, তখন চন্দনকে ফোন করলে তার ফোন বন্ধ বলছে।
তারপর নিত্যমকে ফোন করলে হিন্দিভাষী একজন ফোন ধরে বলেন আপনি যাকে ফোন করেছেন সে বেঁচে নেই। তার পকেট থেকে আমরা ফোনটা পেয়েছি। আর চন্দনের এখনও পর্যন্ত কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না”। এই বিষয়ে স্থানীয় BJP নেতা জুল্লুর রহমান জানান, “আমরা খবর পেয়েছি।
আমরা হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে সব জানিয়েছি যে আমার গ্রামের ছেলে চন্দন রায় যার বয়স ৩৮। আর তার সঙ্গে তার ভগ্নিপতি নিত্যম রায় তারা কাজের সূত্রে করমণ্ডল এক্সপ্রেস করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁদের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
অনেক কষ্টে নিত্যমের ফোনে ফোন করলে একজন ফোন ধরে বলে যে সে বেঁচে নেই। তার ফোন টা তার পকেট থেকে পাওয়া গিয়েছে। আর চন্দনের ফোন সুইচ অফ। আমরা সঠিক কোনও তথ্য পাচ্ছি না। আমাদের রাজ্যে থেকে যে উদ্ধারকারী দল গিয়েছে তাঁদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রেখেছি। আমরা থানায় জানিয়েছি যদি তাঁদের কোনও খোঁজ পাওয়া যায় আমাদেরকে জানাতে”।