তিনি ছিলেন আইন কলেজের অধ্যক্ষ, আইনজীবীও। তাঁর অনেক ছাত্রছাত্রীই আইনজীবী। কিন্তু নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগে আপাতত তিনি ফেঁসে আইনের বেড়াজালে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সেই সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য জেলে করছেনটা কী? প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রে খবর, ১ নম্বর ওয়ার্ডের ১২ নম্বর সেল থেকে বিশেষ একটা বেরোন না মানিক। দিনভর জেলে বসে পড়াশোনা করছেন।
জেল লাইব্রেরি থেকে আনিয়েছেন প্রচুর আইনের বই। বিশেষত, দুর্নীতিদমন আইন সংক্রান্ত একাধিক বইপত্র। আনিয়ে নিয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে পেশ হওয়া চার্জশিট ও রিমান্ডের কপিও। পড়েই চলেছেন সে সব। মানিকের সহবন্দিরা জানাচ্ছেন, সেল থেকে মাঝেমধ্যে তাঁর স্বর ভেসে আসে। তবে কী বলেন, তা ভালো শোনা যায় না। গত বছর ১১ অক্টোবর রাতভর জেরা ও তল্লাশির পর নাকাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিককে গ্রেপ্তার করে ইডি।
তারপর থেকে আছেন প্রেসিডেন্সি জেলে। পরে একই মামলায় জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মানিকের স্ত্রী শতরূপা ও পুত্র সৌভিক ভট্টাচার্যকে। সৌভিকও এখন প্রেসিডেন্সি জেলে, বাবার ওয়ার্ডেই। তবে খানিকটা দূরে। ছেলের সঙ্গে মাঝেমধ্যে দেখা করেন মানিক। পিতা-পুত্রের কথা হয়।
এ বাদে পরিচিত বন্দিদের সঙ্গে দেখা হলে হতাশা চেপে রাখেন না মানিক। বলেন, ‘কোথা থেকে কী হয়ে গেল!’ অতীতে আদালতে সওয়াল-জবাব শেষে একাধিক বার নিজের আইনজীবীদের পরামর্শ দিতে দেখা গিয়েছে মানিককে। তাঁকে দুর্নীতির ‘কিং পিন’ বলে উল্লেখ করে চার্জশিট জমা করেছে ইডি। শতরূপা ও সৌভিকের বিরুদ্ধেও রয়েছে একাধিক ধারায় বিস্ফোরক অভিযোগ। এখন মুক্তি ও আইনি লড়াইয়ের পথ খুঁজতে অনেকাংশে নিজেই ব্যাটন ধরেছেন মানিক।
প্রেসিডেন্সিরই আর এক হাই প্রোফাইল বন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও আজকাল বেশ মনমরা বলে জেল সূত্রে খবর। সেলেই থাকেন। মাঝেমধ্যে বেরোলে পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা হলে প্রায় কাঁদো কাঁদো ভাবেই বলেন, ‘আর বেশিদিন মনে হয় বাঁচব না…।’ কেউ সান্ত্বনা দিলে তাঁদের পার্থ পাল্টা মুখ ঝামটা দিচ্ছেন বলে জেল সূত্রে খবর।