শুক্রবার সন্ধ্যায় ওডিশার বালেশ্বরের কাছে মালগাড়ি এবং চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা ঘটে। তার কিছুক্ষণ পরেই হাওড়াগামী বেঙ্গালুরু হাওড়া এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা ঘটে। এই ট্রেনে ঝাড়গ্রামের বেতকুন্দ্রীর বাসিন্দা রফিক খাঁ এবং তাঁর বাবা খলিল খাঁ ফিরছিলেন কটক থেকে।
বাবার চিকিৎসার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন তাঁরা। বালেশ্বরের কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়া বগিকে ধাক্কা মারে বেঙ্গালুরু হাওড়া এক্সপ্রেস। ট্রেনের শেষের দিকে জেনারেল বগিতে ছিলেন তাঁরা।
দুর্ঘটনার জোরে জ্ঞান হারান তাঁরা। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁরা পরিবারকে ফোন করে বিষয়টি জানান। তারপরেই ঝাড়গ্রাম থেকে পরিবারের লোকজন গাড়ি নিয়ে রওনা দেন বালেশ্বরের উদ্দেশে।
জানা গিয়েছে, রফিক মাথায় গুরুতর ভাবে আঘাত পেয়েছে, রফিকের বাবা বুকে আঘাত পেয়েছেন। সেখান থেকে তাঁদের ঝাড়গ্রাম নিয়ে আসা হয়। শনিবার সকালে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রফিক এবং তাঁর বাবাকে।
এমরোজ খান বলেন, ” আমরা কটক থেকে খড়গপুরে আসছিলাম। ট্রেনে বসে মোবাইল দেখলাম, তখন প্রায় ৭টা ১৫ বাজে। মোবাইল বন্ধ করে পকেটে রেখেছি। তার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিকট একটা আওয়াজ হয়। আমরা সকলেই আসন থেকে নীচে পড়ে যাই।”
তিনি আরও বলেন, “ট্রেন উলটে যাওয়ার পর আমি ট্রেনের উপরে উঠে নীচে ঝাঁপ দিই। এরপর আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে পাশাপাশি গ্রামের লোকজন এসে আমায় জল দেয় এবং আমি জ্ঞান ফিরে পাই। আমার সঙ্গে যে আরও দু’জন ছিল তাদেরকে কে কী ভাবে উদ্ধার করল তা আমি কিছুই জানি না।”
তিনি আরও বলেন, “তাদের সঙ্গে আমার প্রায় জ্ঞান ফিরে পাওয়ার আধ ঘণ্টা পরে দেখা হয়েছে। বাবার বুকে লেগেছে। চোখের সামনে দেখলাম মানুষজনকে মারা যেতে। চারিদিকে লাশের সারি। ভয়াবহ সেই দৃশ্য দেখে গায়ে কাঁটা দিল।”
ঝাড়গ্রাম থেকে উদ্ধারের জন্য গিয়েছিলেন ইলিয়াস আলী। তিনি বলেন, “হাসপাতালের দৃশ্যটা বর্ণনা করতে পারব না। চারিদিকে রক্তাক্ত অবস্থায় মানুষ পড়ে। কারও হাত নেই, কারও পা নেই। এই দৃশ্য কোনওদিন দেখতে হবে তা দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি।”