কাল দুর্ঘটনা হওয়ার পর থেকেই ফোন যোগাযোগ করে যাচ্ছিল উৎকণ্ঠায় থাকায় সৌরভের পরিবারের সদস্যরা। প্রথমে একবার ফোন বেজেওছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর থেকেই আর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। তখনই আতঙ্কে কেঁপে ওঠেন প্রত্যেকেই। কী হল ছেলেটার?
বারুইপুর থানা এলাকার ধপধপি দু’নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম মল্লিকপুরের বছর একুশের সৌরভ রায় ক্যাটারিং সার্ভিসের কাজের জন্য যাচ্ছে বলে বাড়ি থেকে বলে গিয়েছিল। গতকাল সকাল আটটার সময় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। সে জানিয়েছিল ক্যাটারিং সার্ভিসের কাজ পেয়েছিল। সঙ্গে গিয়েছিল তার জামাই বাবু বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। কাজের প্রথম দিনেই বাড়ির একমাত্র ছেলের মৃত্যু সংবাদে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রথমে ছেলের মৃত্যু সংবাদ পায় পরিবারের লোকজন। পরে জানা যায়, সঙ্গে থাকা জামাইবাবু তিনিও রেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
মৃত্যুর খবর আসার পরেই শোকে বিহ্বল গোটা পরিবার, পাড়া প্রতিবেশীরাও। বাবার অসুস্থতার কারণে একাধিক কাজের সন্ধান করেছে সৌরভ। নিজেদের এলাকাতেই একাধিক কাজ করে এইটুকু বয়সেই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিল সে। সদা হাস্য ছেলেটা একটা ভালো কাজের সন্ধান পেয়ে দক্ষিণ ভারতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। শনিবার সকালে এল সেই মর্মান্তিক খবর।
সৌরভের মা পূর্ণিমা রায় জানান, ওর বাবার অসুখ বলে ও সব সময় বলতো আমি যে কোনও একটা ভালো কাজ পেলেই চলে যাব। বাবাকে যাতে কাজ করতে না হয়, সে কারণে বিভিন্ন জায়গায় কাজ খুঁজতে থাকে। এখানেও বিভিন্ন রকম কাজ করতো। কাল বলল, ওখানে কী সার্ভিসের একটা ভালো কাজ পেয়েছে। সেইজন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিল।
শুক্রবার মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা প্রায় তিনশো ছুঁইছুঁই। উদ্ধারকার্য শেষ হয়েছে বলে রেল মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে। প্রায় সাড়ে ছয়শোর উপর যাত্রী হাসপাতালে চিকিৎসারত রয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রেল দুর্ঘটনা বিশদে তদন্ত করে দেখা উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি।