গত শুক্রবার ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সেই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। যেখানে মৃত্যুর সংখ্যা শিহরণ জাগিয়ে তুলেছে গোটা দেশে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সেই করমন্ডল এক্সপ্রেসে করে যাওয়া তিন শ্রমিকের এখনও খোঁজ মেলেনি।
কোলাঘাটের নামালবাড় গ্রামের শেখ জহুর আলি, মুসিবুল পাখিরা, জয়নাল পাখিরা এই তিন শ্রমিক মার্বেলের কাজের জন্য ভুবনেশ্বরের উদ্দেশ্যে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে করেই যাচ্ছিলেন। তারপরেই তাঁদের আর খোঁজ মেলেনি। জীবিত কিংবা মৃত তাও জানেন না এই শ্রমিকদের পরিবার।
যার ফলে এই তিন পরিবার আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন, আদৌ তাঁদের বাড়ির মানুষ সুস্থভাবে বাড়ি ফিরবে তো! তা নিয়েই সংশয়ে রয়েছে তিন পরিবার। তিনজনই বিবাহিত। তিনজনেরই ছোট ছোট সন্তান রয়েছে। প্রত্যেকের পরিবার পরিজনেরা মর্মান্তিক খবর পাওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
দুশ্চিন্তার মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন তাঁরা। পাড়া প্রতিবেশীরা ভিড় জমাতে শুরু করেন তাঁদের বাড়ির সামনে। তাঁরাও সকলে চাইছেন তাদের প্রতিবেশী তিন যুবক জীবিত অবস্থায় যেন বাড়ি ফিরে আসেন। এই বিষয়ে শেখ জহুর আলির স্ত্রী জানান, “ওরা তিনজনেই মার্বেলের কাজ করেন। এই রাজ্যের তুলনায় বাইরের রাজ্যগুলিতে কাজ করলে উপার্জন অনেকটাই বেশি হয়। সেই কারণেই বেশিরভাগ সময় আমার স্বামী বাইরেই কাজ করতেন। এখন ওনার কোনও খোঁজ পাচ্ছি না। প্রশাসনের তরফেও কিছুই বলতে পারছে না।”
তিনি আরও বলেন, “বেঁচে আছেন নাকি মারা গিয়েছেন তাও বুঝতে পারছি না। বেঁচে থাকলেও কি অবস্থায় রয়েছেন, কতটা সুস্থ রয়েছেন সেটা জানতে পারলেও একটু শান্তি পেতাম। এবার আমাদের সংসারের কি হবে সেটা ভেবেই আতঙ্ক লাগছে।” শেখ জহুর আলির পরিবারের মতো অবস্থা বাকি পরিবারগুলিরও।
প্রত্যেকেই চাইছেন প্রশাসন কিছু একটা ব্যবস্থা করুক। খুঁজে দিন তাঁদের প্রিয়জনকে। জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। সেই সঙ্গে নিখোঁজ অনেকেই। এই তিন পরিবারের মতোই সেই পরিবারগুলিও হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন নিজের কাছের মানুষটিকে।