মৃত ব্যক্তির পরিবার সূত্রে খবর, অন্যান্য দিনের মত শুক্রবার বিকেলেও ট্রেনে তিনি চা বিক্রি করছিলেন। করমণ্ডল এক্সপ্রেসে তাঁর ওঠার কথা না থাকলেও শেষ পর্যন্ত উপার্জনের আশায় ওই ট্রেনে চেপেছিলেন পিনাকী। অন্যদিকে পিনাকীর মৃত্যুর খবর আসার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের লোকজন।
পিনাকী মণ্ডলের ভাগ্নি হেনা জানান, “মামা গত পাঁচ বছর ধরে বালেশ্বরে থেকে ট্রেনে ট্রেনে চা বিক্রি করতেন। শুক্রবার মামা ও আমার স্বামী একসঙ্গে ট্রেন থেকে নেমেছিলেন। ট্রেন থেকে নামার পর আমার স্বামী মামাকে কাজ না করতে পরামর্শ দিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বলেছিলেন।”
হেনা মণ্ডল জানান, “মামা পরের ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা বললেও না গিয়ে অভিশপ্ত টেনে উঠে পড়েছিলেন। বিষয়টি আমার স্বামী জানতে পারেননি। পরে ট্রেন দুর্ঘটনার পর স্বামী মামার ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও মামার ফোন সুইচ অফ পান। এরপর দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে মামার মৃতদেহ দেখতে পান আমার স্বামী।”
তিনি আরও জানান, “মামা বাইরে থাকলেও ১৫ থেকে ২০ দিন পরপর বাড়িতে আসতেন। কয়েকদিনের মধ্যে তাঁর বাড়িতে আসার কথা ছিল।” হেনা মণ্ডল জানান, “অনেক কষ্ট করে ছেলেমেয়েকে পড়াশোনা করাচ্ছিলেন। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল।”
এদিকে, বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর ২৬ ঘণ্টা পার। এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আর কোনও প্রাণের সন্ধান মেলে কি না, চলছে তার খোঁজ। গত এক দশকে একসঙ্গে এত মৃত্যু দেখেনি কেউ। পড়শি রাজ্যে দুর্ঘটনা হলেও, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দার মৃতের সংখ্যাটা বহু।
শনিবার সন্ধে পর্যন্ত রাজ্য সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে রেল দুর্ঘটনায় আহতরা ভর্তি রয়েছেন। ওড়িশা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্ত ধরণের খোঁজখবর রাখছে রাজ্যের প্রশাসন।