সোমবার বেলা ১১টা বেজে ৩৪ মিনিটে ৪৮ সেকেন্ডের জন্য কলকাতা শহর সাক্ষী থাকল এক বিরল মুহূর্তের। রাস্তা দিয়ে হাঁটছে মানুষজন, চলছে গাড়ি-ঘোড়া অথচ কোনওকিছুরই ছায়া দেখা গেল না।
আজগুবি ঠেকলেও বিষয়টি আদৌ অবাস্তব নয়। কলকাতায় এদিন পালিত হল জিরো শ্যাডো ডে। এদিন কয়েক মুহূর্তের জন্য শহর ছায়াশূন্য হয়ে যাওয়ার পিছনে রয়েছে বিজ্ঞানসম্মত কারণ। আপাতভাবে ঘটনাটি অবাক করে দেওয়ার মতো হলেও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছে, এটি অত্যন্ত স্বাভাবিক।
কেন হঠাৎ ছায়াশূন্য তিলোত্তমা? জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পৃথিবী নিজের অক্ষেরেখা বরাবর সাড়ে ২৩ ডিগ্রি হেলে সূর্যের চারিদিকে ঘোরে। আর এই হেলে থাকার জন্য পৃথিবীর মানুষের চোখে সূর্য বিষুবরেখা থেকে উত্তরে কর্কটক্রান্তি এবং দক্ষিণে মকরক্রান্তি রেখার মধ্যে অবস্থান করে। এই পথে যে যে অংশে সূর্যের আলো লম্বালম্বি পড়ে সেই জায়গাগুলি কিছুক্ষণের জন্য ছায়াহীন হয়ে যায়।
সূর্য যখনই পুরোপুরি মাথার উপর আসে, তখনই অদৃশ্য হয় ছায়া। ওই মুহূর্তে এবং তার পরবর্তী কয়েক সেকেন্ড ছায়ার দৈর্ঘ্য এতটাই কম থাকে যে কার্যত ছায়াশূন্য মনে হয় সমস্ত বস্তু।
সামনের মাসেই ফের ছায়াশূন্য হবে কলকাতা ভৌগলিক অবস্থানের নিরিখে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন দিন এই জিরো শ্যাডো ডে পালিত হয়। পৃথিবীতে কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখার মধ্যে বসবাসকারী মানুষ, বছরে দু’ বার জিরো শ্যাডো ডে উপভোগ করতে পারেন। বিড়লা তারামণ্ডলের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ৮ জুলাই বেলা ১১টা বেজে ৪১ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে চলতি বছর দ্বিতীয়বারের জন্য ছায়াশূন্য হতে চলেছে মহানগর।
কেবলমাত্র কলকাতাই নয়, চলতি বছর মুম্বই এবং বেঙ্গালুরুও এই ছায়াশূন্যতার সাক্ষী হয়েছিল। গত ২৫ এপ্রিল বেঙ্গালুরুর বাসিন্দারা উপভোগ করেছিলেন জিরো শ্যাডো ডে। কয়েক মুহূর্তের জন্য গোটা শহরেই গায়েব হয়েছিল সমস্ত কিছুর ছায়া।
এর পাশাপাশি, গত ১৫ মে মুম্বই শহরে গায়েব হয়ে গিয়েছিল ছায়া। তবে কোনও জাদুবলে নয়, সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক কারণেই ছায়াহীন হয়েছিল বাণিজ্য নগরী। মুম্বই শহরে প্রতিবছর ১৫ মে এবং ২৮ জুলাই জিরো শ্যাডো ডে পালিত হয়।