রবিবার রাতেই চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের ধানগাড়া অঞ্চলের বালুয়াঘাট এলাকার নিজের বাড়িতে কফিন বন্দী দেহ ফিরল মাশরাকুলের। রাতেই কবরস্থ করা হয় মাশরেকুলকে। পরিবারের দাবি, এলাকায় সেভাবে কাজ না থাকায় চেন্নাই গিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করেন মাশরেকুল।
এই প্রথম পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বাইরে গিয়ে কাজ করার কথা ভেবেছিলেন তিনি। সেইমতো অভিশপ্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসে চেপে বসেন। দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হতেই চরম উৎকন্ঠা তৈরি হয় পরিবারে। শনিবার ভোর ৫ টা নাগাদ মাশরেকুলের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন পরিবারের লোকজন। বাবা জিয়াউল হক পেশায় দিন মজুর।
মা রেহেনা বিবি সাধারণ গৃহবধূ। কয়েক শতক জমিতে ভিটে বাড়িই সম্বল। সেখানে ভাঙাচোরা ঘরেই কোনোরকমে বসবাস তাঁদের। মাশরেকুলরা দুই ভাই ও এক বোন। বাড়ির বড় সন্তান সে। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী রুকসানা খাতুন ও দুই নাবালক সন্তান।
ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত মাশরেকুলের অসহায় পরিবারের হাতে রাজ্য সরকারের তরফে পাঁচ লাখ টাকার চেক তুলে দিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ও তজমুল হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন মালদার জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া, মালদার এসপি প্রদীপ কুমার যাদব, চাঁচল-২ BDO দিব্যজ্যোতি দাস, মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বকশি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন তাঁরা। মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। রাজ্য সরকার ও প্রশাসন এই সন্তানহারা পরিবারটির পাশে সবরকমভাবে থাকবে। এই পরিবারের জন্য কি করা যায় আমরা তা ভেবে দেখছি।”
মৃত মাশরেকুলের বাবা জিয়াউল হক বলেন, “আমাদের ছেলে কোনোদিন বাইরে যায়নি। এই প্রথম বাইরের রাজ্যে যাচ্ছিল কাজে। এই এলাকায় সেরকম কাজের সুযোগ নেই। টুকটাক কাজ করলেও সেরকম উপার্জন হত না। সেই কারণে মাশরেকুল বাইরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বলেছিল, দক্ষিনের রাজ্যগুলিতে মালদার অনেক লোক কাজ করেন। সেই সঙ্গে টাকাও অনেক বেশি। সেই কারণে আমরাও সায় দিই। জানতাম না যে তাঁর প্রথম যাত্রাই শেষ যাত্রা হয়ে যাবে।”