ওডিশার বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর কেউ জীবিত বা মৃত অবস্থায় বাড়ির ফিরলেও এখনও কোনও হদিশ নেই সঞ্জয়ের। এক নাগাড়ে মোবাইল ফোন বেজে গেলেও তুলছেন না উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের বাসিন্দা সঞ্জয় মণ্ডল। অবশেষে স্থানীয় বিডিওর নির্দেশে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে সরকারি প্রতিনিধিরা বালেশ্বরের উদ্দেশে রওনা দিলেন।
দুর্ঘটনার পর থেকে সঞ্জয়ের হদিশ না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছে পরিবার। স্বামীর খোঁজ না পেয়ে হতাশ তাঁর স্ত্রীও। গোটা গ্রাম জুড়ে বিষণ্ণতার ছবি। বসিরহাটের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের রুপমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁশতলি গ্রামের বছর আটত্রিশের সঞ্জয় কর্মসূত্রে কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে ছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’মাস আগে বাড়িতে এসেছিলেন সঞ্জয়। তারপর যশোবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসে শুক্রবারে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। বুধবার ট্রেনে ওঠার আগে একবার ফোনে সঞ্জয়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর স্ত্রীর। ব্যাস তারপর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ নেই। দুর্ঘটনার পর প্রায় ৯০ ঘণ্টা কাটতে চললেও এখনও তাঁর কোনও খোঁজ নেই। ট্রেনে ওঠার আগে শেষ কথা হয়েছিল স্ত্রী আরতি মণ্ডল ও ছেলে বিশ্বজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে। মোবাইল বেজে গেলেও কেউ ধরছে না। খবরও দিতে পারছে না ওডিশা সরকারও। হতাশা আর আতঙ্ক গ্রাস করেছে সঞ্জয়ের পরিবারের সদস্যদের। কবে সঞ্জয়ের সঙ্গে দেখা হবে, সেই নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে পরিবার।
সকাল থেকেই গ্রামের মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন উত্তর বাঁশতলি গ্রামে। এদিন সকালে হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও শাশ্বত প্রকাশ লাহিড়ি, যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক আবুল কালাম আজাদ, হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অর্চনা মৃধা, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তুষার মন্ডল ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শহিদুল্লাহ গাজি সহ ১০ জনের একটি প্রতিনিধি দল সঞ্জয় মণ্ডলের বাড়িতে আসেন। সঞ্জয়ের স্ত্রীয়ের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়। আর্থিকভাবে মণ্ডল পরিবারকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন প্রতিনিধিরা।
পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শহিদুল্লাহ গাজি এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই পরিবারের পাশে আমরা আছি। দুস্থ পরিবারে সব রকম সাহায্যের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়াও সঞ্জয় মন্ডলের খোঁজ নিতে আমরা বদ্ধপরিকর।’ বিডিও শাশ্বত প্রকাশ লাহিড়ি বলেন, ‘পরিবারের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন বালেশ্বরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। এমনও হতে পারে সঞ্জয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক, তাঁর কথা বলার কোনও ক্ষমতা নেই, ওখানে চিকিৎসা চলছে।