রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে কাকে বসানো হবে এই নিয়ে দীর্ঘদিনের টালবাহানা চলছিল রাজ্য সরকার ও রাজভবনের মধ্যে। গত মাসে প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের মেয়াদ শেষ হয়। নিয়ম অনুযায়ী রাজীব সিনহার নাম পাঠিয়েছিল নবান্ন। রাজ্য সরকার এই পদে সৌরভের উত্তরসূরি হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার নাম পাঠিয়েছিল।
যদিও একটি নাম পাঠানো নিয়ে আপত্তি জানায় রাজভবন। এরপর দ্বিতীয় নাম হিসাবে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অজিতরঞ্জন বর্ধনের নাম পাঠানো হয় বলে জানা যায় নবান্ন সূত্রে। তবে এতেও রাজি ছিল না রাজভবন। ফের তৃতীয় বিকল্পের নাম চেয়ে পাঠানো হয় রাজভবনের তরফে। মাঝে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোধ মন্তব্য করেন সঠিক সময়েই রাজ্য নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
যদিও কিছুদিন আগেই রাজভবনের গড়িমসি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি জানান, রাজভবনের নাম না পছন্দ হলে নাম ফেরত পাঠিয়ে দিতে পারে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের পদটি খালি পড়ে রয়েছে। এরকম সমস্যা আগে কোনওদিন তিনি পড়েননি বলেও জানান।
বিষয়টি নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নর একটি প্রচ্ছন্ন বিরোধ চলছিল বলে মনে করতে থাকেন অনেকে। এরপর বুধবার সকালে খবর আসে রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত নামে সায় দিয়েছে রাজভবন। রাজ্য সরকারের তরফে প্রথমেই রাজীব সিনহার নাম পাঠানো হয়েছিল, সেই নামেই সায় দেয় নবান্ন। উল্লেখ্য, গত ২৮ মে বিদায়ী রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপরেই নাম পাঠানো শুরু করে নবান্ন।
রাজীব সিনহা এর আগে মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে তাঁকে রাজ্যের শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যানের পদে বসানো হয়। এবার তিনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে ভূমিকা পালন করতে চলেছেন। যদিও চলতি বছরে আর কয়েক মাসের মধ্যেই পঞ্চায়েত নির্বাচন সংঘটিত হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে কমিশনার হয়েই তাঁকে পঞ্চায়েত নির্বাচন সংঘটিত করতে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে নতুন দায়িত্ব নিয়েই শীঘ্রই পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করতে পারেন রাজীব সিনহা বলে মনে করা হচ্ছে।