অরিজিৎ দে | এই সময় ডিজিটাল এক্সক্লুসিভ
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে অনুব্রত-হীন ভোট দেখেনি বীরভূম। কিন্তু গোরু পাচারকাণ্ডে কেষ্ট এখন গারদে। সুদূর তিহাড় জেলে বন্দি বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এবারে বীরভূমের এখনও অবধি ‘চড়াম চড়াম ঢাক’-র শব্দ নেই। নেই গুড় বাতাসাও। ভোট ঘোষণার বহু আগেই মাঠে নেমে পড়েছেন ‘অনুব্রত বিরোধী’ বলে পরিচিত আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, কাজল শেখরা।
কিন্তু জেলা রাজনীতির অলিন্দে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে এক অন্য গল্প। কেষ্টর অনুপস্থিতিতে জেলা তৃণমূলের ‘মুখ’ হিসেবে ক্রমশ উঠে আসছেন এক সাংসদ। তিনি এক সময়ের টলিউড কাঁপানো অভিনেত্রীও বটে। হ্যাঁ ঠিকই ধরছেন, তিনি বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়।
শতাব্দীর সঙ্গে অনুব্রতর ‘ঠান্ডা লড়াই’ সর্বজনবিদিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জেলা কোর কমিটিতে স্থান পাওয়ার পর শতাব্দী এখন অনেক বেশি সক্রিয়। কর্মীদের কাছে বাড়ছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও। বীরভূমের তৃণমূলকর্মীদের দাবি, বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শতাব্দীকে এখন অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে।
অনুব্রতর সাহায্য নিয়ে যে শতাব্দী বীরভূম থেকে তিন তিনবারের সাংসদ, পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বাজতে তিনি কি ‘কেষ্ট দা’-কে মিস করছেন? এই সময় ডিজিটালের প্রশ্নের মুখে তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে মিস করার কোনও ব্যাপার নয়। এতদিন ধরে জেলা সংগঠন উনি দেখতেন। ভালো-মন্দ সব কিছু দায়িত্ব নিয়ে করেছেন। এখন নির্বাচন, যে মানুষটার সঙ্গে এত বছর ধরে কাজ করেছি, তাঁর কথা মনে পড়বে এটাই স্বাভাবিক।’
শতাব্দীর কথায়, ‘এতদিন ধরে যাঁরা ওঁর দ্বারা উপকৃত হয়েছেন, এখন যদি তাঁরা ভুলে যান, সেটা মোটেই ঠিক নয়। মানুষ হিসেবে তাঁকে মনে রাখা উচিত। উনি দলীয় সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন, এটা মানতেই হবে। না মেনে কোনও উপায় নেই।’
তিহাড়ে বন্দি অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে শতাব্দীই কী এখন জেলা তৃণমূলের মুখ? এই প্রশ্নের জবাবেও মুখ খুলেছেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, ‘জেলা তৃণমূলের মুখ হওয়ার জন্য আমি চেষ্টা করছি বা সুযোগ ব্যবহার করছি এমনটা কিন্তু নয়। এতদিন সংগঠন দেখার কোনও ব্যাপার ছিল না। কেষ্টদা সবটা দেখতেন, তাই আমি নিজের কাজটুকু করতাম। এখন কিছু কিছু জায়গায় অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হস্তক্ষেপ না করলে দলের ক্ষতি হবে। সেই কারণে আমাকে ইনভলব হতে হচ্ছে। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছি না।’