ভাটপাড়া থানার পুলিশ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক একসঙ্গে থাকতে চাইলে কেউ আপত্তি জানাতে পারে না। এমনকী পুলিশও নয়। পুলিশের আশ্বাসে হাসিমুখে প্রেমিকের বাড়িতেই ফিরেছেন ওই তরুণ। কাঁকিনাড়ার এক ৪২ বছরের যুবকের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয়েছিল কাঁথির কলেজ পড়ুয়া তরুণের। পরিচয় ক্রমে গভীর হয়। ফোন নম্বর দেওয়া নেওয়ার পর গত এক বছরে দু’জনে আরও কাছাকাছি চলে আসেন।
একে অপরের প্রেমে হাবুডুবু খেতে থাকেন। কলেজ পড়ুয়া তরুণের মোবাইল কোনও ভাবে হাতে আসতেই মা-বাবা বুঝতে পারেন, তাঁদের ছেলে এক মধ্যবয়স্ক যুবকের প্রেমে পড়েছে। তারপরেই শুরু বাড়িতে অশান্তি। ছেলেকে হাজার বুঝিয়েও কোনও কাজ না হওয়ায় শেষে মোবাইলটি কেড়ে নেন বাবা। প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কাঁথির তরুণের। তিনি কোনও ভাবে কাঁকিনাড়ার যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দু’জনেই একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
২৯ মে ব্যাগ গুছিয়ে কাঁথির বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন তরুণ। মা-বাবার জন্য একটি চিরকুট ছেড়ে যান- ‘আমি কাঁকিনাড়ায় চললাম।’ এখানেই থামেননি। যাতে বিষয়টি অন্য দিকে না গড়ায়, তাই ওই দিনই কাঁথি এবং ভাটপাড়া থানাতেও চিঠি পাঠান দু’জনে। পুলিশকে লেখা চিঠির বয়ানের মূল বক্তব্যই ছিল, তাঁরা স্বেচ্ছায় একসঙ্গে থাকতে চান।
উল্লেখ্য, কাঁথির বাড়িতে প্রবল আপত্তি থাকলেও কাঁকিনাড়ার পরিবার অবশ্য ছেলের পার্টনারকে সাদরে মেনে নেয়। তবু কোনও এক অজানা আশঙ্কায় দু’জনে কাঁকিনাড়ার বাড়িতে না এসে অন্যত্র চলে যান। ক’টা দিন একান্তে কাটিয়ে সদ্য কাঁকিনাড়ার বাড়ি ফেরেন প্রেমিক যুগল। আর রবিবারই সেখানে হাজির কাঁথির তরুণের মা-বাবা। তাঁরা ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যেতে অনড় হয়ে থাকেন। ছেলেও জেদ ধরে বসে থাকে। শেষে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ সকলকে ভাটপাড়া থানায় ডেকে পাঠায়।
থানাতে গিয়েও শুরু হয় অশান্তি। তরুণের মা-বাবা ছেলেকে নিয়েই বাড়ি ফিরবেন বলে জেদ ধরে বসেন। অথচ ছেলে যেতে রাজি নয়। শেষে পুলিশ জানিয়ে দেয়, এ ভাবে প্রাপ্তবয়স্ক কাউকে জোর করে নিয়ে যাওয়া যায় না। মা-বাবাও পারেন না। পুলিশও পারে না। থানা তাঁদের পাশে না দাঁড়ানোয় শেষমেশ খালি হাতেই কাঁথি ফিরে যান কলেজ পড়ুয়া তরুণের মা-বাবা। ছেলে প্রেমিকের সঙ্গে ফিরে আসেন কাঁকিনাড়ার বাড়িতে।