পর্দায় ভারতের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার ওটি টেকনিশিয়ানের জীবনকাহিনি, ‘জিয়ার গল্প’


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো:  গোটা জুন মাস জুড়ে সারা বিশ্বে ‘প্রাইড মাস'(Pride Month) পালিত হয়। সারা মাস জুড়ে চলে কর্মসূচী। ভারতে এই কর্মসূচীর অন্যতম উদ্যোগ পরিচালক ঋতমা ঘোষের নতুন তথ্যচিত্র(documentary) ‘জিয়ার গল্প’। ভারতের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার ওটি টেকশিয়ানের(First Transgender OT Technician) জীবনকাহিনি নিয়ে তৈরি হয়েছে এই তথ্যচিত্র। আগামী ১৬ জুন ‘জিয়ার গল্প’-এর বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সঙ্গে থাকছে একটি আলোচনা সভা। অংশগ্রহণ করবেন সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। আলোচনার মূল বিষয় ‘নিজের জেন্ডার নিজে নির্বাচন করুন’।

১৯৬৯ সাল থেকে সমাজে তৃতীয় লিঙ্গের(third gender) অধিকার নিয়ে লড়াই শুরু হয়েছিল। সেই লড়াই আজও চলছে। সারা বিশ্বে এবারের প্রাইড মাসের প্রধান কর্মসূচি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সমানাধিকার। সমাজে সবার সঙ্গে একাসনে যেন বসতে পারে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ।এই সমানাধিকারের লড়াই ধীরে ধীরে সমাজে ছাপ ফেলতে শুরু করেছে। সমাজের বহু স্তরে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা আজ স্বীকৃতি পাচ্ছে। মূলস্রোতে তাদের সাদরে গ্রহণ করা হচ্ছে। পরিবারে, সমাজে, স্কুল-কলেজে, কাজের জায়গায় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে। পরিচালক ঋতমা ঘোষের তথ্যচিত্র ‘জিয়ার গল্প’ এই সাদরে গ্রহণ করার দিকটাই তুলে ধরেছে। 

আরও পড়ুন- Prabhu Deva: ‘অনেক কাজ করেছি, এবার…’, ৫০ বছরে বাবা হয়ে আনন্দে আত্মহারা প্রভু দেবা…

জিয়া একজন রূপান্তরকামী পুরুষ। তিনি শরীরে পুরুষ, মননে নারী। তাঁর এই নারীসত্ত্বাকেই তিনি প্রাধান্য দিতে চান। তাই তিনি লম্বা চুল রাখেন, মেয়েদের পোশাক পরেন, ঠোঁটে লিপষ্টিক লাগান—তিনি শরীরে পুরুষ হলেও জেন্ডার হিসাবে  নারীসত্ত্বাকেই তিনি নির্বাচন করেছেন। তাঁর এই নিজের ইচ্ছাকে সাদরে গ্রহণ করেছে আমাদের এই তথাকথিত গোঁড়া সমাজ। জিয়া ভারতের প্রথম ওটি টেকনিশিয়ান হয়ে কলকাতার একটি নামী হাসপাতালে চাকরি পান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, তাঁর সহকর্মীরা, রোগীরা, রোগীর পরিবার সবাই জিয়ার ইচ্ছেকে সম্মান দেন। তাঁকে কাছে টেনে নেন। জিয়া এখন সেই হাসপাতালে দাপিয়ে কাজ করছেন। কোনও বিশেষ লিঙ্গের মানুষ হয়ে নয়, জিয়া একজন মানুষ হয়ে মানুষের সেবা করছেন। 

এই প্রাইড মাসে ঋতমার ‘জিয়ার গল্প’ তথ্যচিত্রের গুরুত্ব খুব বেশি। জিয়ার লড়াই খুব কঠিন লড়াই। এই লড়াইয়ে এগিয়ে এসেছে সমাজের একটা অংশ। সমাজের অনেকটা অংশ এখনও অন্ধকারে। সেই অন্ধকারে আলো দেখাবে এই ‘জিয়ার গল্প’-এর মত তথ্যচিত্রগুলি। পরিচালক ঋতমার কথায়, “এই পৃথিবীতে একজন মানুষ যখন জন্মায়,তার নিজের মত করে বাঁচার অধিকার আছে। কিছু মানুষ তার বিরোধিতা করলে অন্যান্য মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। আমি সিনেমার মাধ্যমে এই সমাজ সচেতনার কাজটা যতটা সম্ভব করে যেতে চাই।”

আরও পড়ুন- Shah Rukh Khan: অবশেষে ধূমপান ছাড়লেন শাহরুখ? #AskSRK সেশনে সত্যিটা সামনে আনলেন সুপারস্টার…

ঋতমা এর আগে তৃতীয় লিঙ্গের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ‘ইন্টরল্যুড’, এইচআইভি পজিটিভদের নিয়ে ‘কোয়েস্ট’-এর মত বেশ কয়েকটি তথ্যচিত্র বানিয়েছেন। ‘জিয়ার গল্প’ মূলত সাক্ষাৎকার ভিত্তিক তথ্যচিত্র। জিয়ার সহকর্মীরা এবং সমাজের বিশিষ্ট কয়েকজনের বক্তব্য এখানে রাখা হয়েছে।

আর যাঁকে নিয়ে এই তথ্যচিত্র, সেই জিয়া কী বলছেন? তিনি খুবই খুশি। জিয়া বলেন, ‘আমার লড়াই, আমার জীবনকাহিনি নিয়ে যে তথ্যচিত্র বানানো হয়েছে, আমি সত্যি কৃতজ্ঞ। আমার কাহিনি আমার মত কোনও মানুষকে যদি সাহস যোগাতে পারে,সেখানেই আমার এই লড়াইয়ের সার্থকতা’।‘জিয়ার গল্প’ প্রদর্শনের জন্য নানা জায়গা থেকে অনুরোধ আসছে। ১৬ জুন এই  ক্যাফে পজিটিভ-এ এই তথ্যচিত্রের প্রথম প্রদর্শনী হতে চলেছে।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *