জেলার তৃণমূল নেতারা অভিযোগ করছেন, গরম পড়ার পর থেকেই প্রতিদিন গ্রামের দিকে দফায় দফায় লোডশেডিং শুরু হয়েছে। কোথাও কোথাও দিনে চার-পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। রাতের দিকেও রোজ নিয়ম করে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। কোথাও আবার লো ভোল্টেজ দেখা দিচ্ছে। তীব্র গরম, তার উপর বিদ্যুৎ না থাকায় গ্রামের মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠছে। দৈনন্দিন কাজকর্মেও ব্যাঘাত ঘটছে।
সূত্রের খবর, বিভিন্ন জেলা মিলিয়ে বহু কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে রয়েছে। সাধারণ নিয়ম হলো, যখন বিদ্যুতের চাহিদা খুব বেড়ে যায় তখন সেই সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়। গ্রামের দিকে অনেকে হুকিং করে বিদ্যুৎ নেন। গ্রামাঞ্চলেও এসি’র সংখ্যা বর্তমানে বেড়ে গিয়েছে। তার জন্য অনেক ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া, ঝড়বৃষ্টির কারণে তার ছিড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকায় অনেক সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
লোডশেডিংয়ের কারণ যাই হোক না কেন, তা নিয়ে ভোটের মুখে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল। পূর্ব মেদিনীপুরের এক তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রীর ব্যাখ্যা, শহরের মতো এখন গ্রামের মানুষও পুরোপুরি বিদ্যুৎ নির্ভর হয়ে পড়েছে। লোডশেডিংয়ের জন্য তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। ওই তৃণমূল নেতার কথায়, ‘অন্য সময় লোডশেডিং হলে হয়তো তেমন কোনও সমস্যা হতো না। কিন্তু সামনে ভোট আছে বলে লোকজন এটা নিয়ে হইচই করছে। এসব বন্ধ করতে না পারলে ভোটে বিরোধীরা এটাকে অস্ত্র করতে পারে।’
কেন এত লোডশেডিং হচ্ছে, তার কারণ অনুসন্ধান করতে এদিন দুপুর আচমকাই সল্টলেক বিদ্যুৎ ভবনে ঢুকে পড়েন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পরে বিরোধী দলনেতা সাংবাদিকদের বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের সমাধান চেয়ে কথা বলতে এসেছিলাম। সিএমডি দেখা করেননি। এর থেকে পরিতাপের আর কিছু হয় না।’ তাঁর দাবি, সরকার কয়লা কিনতে পারছে না। সেজন্যই এত লোডশেডিং হচ্ছে।
রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস অবশ্য এই অভিযোগকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘রাজ্যে বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে আমাকে কেউ কোনও অভিযোগ করেনি। আমাদের রাজ্যে কোনও লোডশেডিং নেই। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু এলাকায় কারিগরী কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের রাজ্যকে সেরার স্বীকৃতি দিয়েছে। এর পর কেউ যদি তাদের ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে ইচ্ছাকৃত ভাবে রাজ্য সরকারের কৃতিত্বকে খাটো করতে চান, তা হলে আমার কোনও মন্তব্য করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’