গত ১১ জুন এই মর্মে বিশ্বভারতীর আচার্য তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিশ্বভারতীর পরিদর্শক তথা দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, প্রথমে বিশ্বভারতীর অভ্যন্তরীণ কমিটির কাছে যৌন নির্যাতন ও অন্যান্য অভিযোগ লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন ওই গবেষক। কমিটির ডাকে নিজের বয়ানও দিয়ে এসেছিলেন। সুদীপ্ত চিঠিতে লিখেছেন, ‘তদন্ত শেষে কমিটি উপাচার্যের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু এক্ষেত্রে অভিযুক্ত অধ্যাপক উপাচার্যের অনুগত হওয়ার কারণে অভিযোগের প্রায় এক বছর অতিক্রান্ত হলেও অভিযোগকারীকে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি।
উল্টে তাঁর গবেষণার কাজ আটকে রাখা হয়।’ উপাচার্যের অনুগত অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে ওই চিঠিতে চাঞ্চল্যকর ভাবে দাবি করা হয়েছে। এমনকী, বিশ্বভারতীর অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি রিপোর্টে অভিযুক্ত অধ্যাপককে দোষী সাব্যস্ত করার পরেও উপাচার্য কোনও ব্যবস্থা নেননি বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য ও কৌশিক ভট্টাচার্য।
পরে তথ্যের অধিকার আইন প্রয়োগ করে ওই গবেষক জানতে পারেন যে, বিশ্বভারতীর অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি তাদের সুপারিশ জানালেও, তা ৪ মাস ধরে চেপে রেখে দেওয়া হয়েছে। শেষমেষ বাধ্য হয়েই ৩১ মে শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই গবেষক। শেষমেষ বিশ্বভারতীর অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির রিপোর্ট তাঁকে দিতে বাধ্য হন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
এই প্রসঙ্গে ভিবিউফা সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘উপাচার্য দীর্ঘ কয়েক মাস আইসিসি রিপোর্ট ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে অভিযুক্তকে আড়াল করেছেন। ১৪ দিনের জেল হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে নিয়ম মেনে সাসপেন্ড করেননি। পুলিশে এফআইআর হওয়ার পর তড়িঘড়ি রিপোর্ট দেওয়া হয়। আমরা অবিলম্বে এই উপাচার্যর শাস্তি দাবি করছি।’
২০১৫ সালে পিএইচডি করার জন্য নিজের নাম নথিভুক্ত করান অভিযোগকারিণী। বর্তমানে তিনি অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর অভিযোগ, চার বছর পর গবেষণার কাজ শেষ করে তিনি তাঁর গাইড অধ্যাপক রাজর্ষি রায়কে চূড়ান্ত উপস্থাপনার জন্য অনুরোধ করেন। বিনিময়ে অধ্যাপক তাঁর কাছে অশালীন দাবি জানান বলে অভিযোগ। বিশ্বভারতীর সব স্তরে অভিযোগ জানিয়েও লাভ না হওয়ায় গত ৩১ মে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। শেষমেষ গত ২ জুন অভিযুক্ত অধ্যাপক রাজর্ষি রায়কে গ্রেপ্তার করে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ।