তারপরেই চলে লুটপাট। ভাঙা হয় একাধিক তালা। দু’টি ব্যাগে নগদ টাকা এবং ভল্টে থাকা গয়না নিয়ে প্রায় ১৫ মিনিটের অপারেশনের পরে পালিয়ে যায় তারা। যাওয়ার আগে সিসিটিভির হার্ডডিস্ক খুলে নেয় তারা। দশটা পাঁচ নাগাদ কয়েকজন গ্রাহক ব্যাঙ্কে ঢুকে দেখেন কোনও আধিকারিক টেবিলে নেই। কিছুক্ষণ পরে বাথরুমের ভিতর থেকে চিৎকার শুনতে পেয়ে এক গ্রাহক দরজা খুলে দেন।
গ্রাহকরাই কর্মীদের উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। সিউড়ির বাসিন্দা পার্থসারথি নায়েক বলেন, ‘ঠিক দশটা পাঁচ নাগাদ চেক জমা দিতে ব্যাঙ্কে যাই। দেখি ব্যাঙ্কের সব টেবিল ফাঁকা। কেউ কোথাও নেই। দু’চার মিনিট বসতেই হঠাৎ বাথরুম থেকে দরজা খুলুন, দরজা খুলুন বলে চিৎকার শুনতে পাই। দরজা খুলে দেখি, সবাই বাথরুমে বন্দি।’
ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। ব্যাঙ্কে ডাকাতির ঘটনায় ঠিক কত টাকা বা সোনা লুট হয়েছে, এখনও স্পষ্ট নয়। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার চঞ্চল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘ঠিক কত টাকা ও অলঙ্কার ব্যাঙ্ক থেকে ডাকাতদলরা নিয়ে গিয়েছে তার হিসাব চলছে। তারপরেই সঠিক হিসাব জানানো যাবে। তবে একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে তা মানতে হবে।’
সূত্রের খবর, ডাকাত দল দু’টি ব্যাগে নগদ টাকা এবং ভল্টে থাকা কিছু অলঙ্কার নিয়ে গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা এবং লোনের জন্য রাখা কিছু অলঙ্কার ব্যাঙ্ক থেকে লুট করেছে দুষ্কৃতীরা। ঘটনার খবর পেয়ে ব্যাঙ্কে পৌঁছন বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। তিনি নিজেও ব্যাঙ্কের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।
বীরভূম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পরাগ ঘোষ বলেন, ‘আমরা প্রযুক্তিবিদদের ডেকেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কত টাকা লুট হয়েছে তা হিসাব করে দেখছেন ব্যাঙ্কের কর্মীরা।’ ব্যাঙ্ক চত্বরে থাকা অন্য একটি সংস্থার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তা খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেছে দেখা যাচ্ছে, হেলমেট পরে মোট ৬ জন দুষ্কৃতী ব্যঙ্কে ঢুকেছিল। তিন জনের হাতে ছিল তিনটি ব্যাগ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে দুষ্কৃতীরা ঝাড়খণ্ডের দিকে পালিয়ে গিয়েছে। গত বছর ১৪ মার্চ পাথরচাপুরির একটি ব্যাঙ্কে হানা দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। দশ বছর আগে বোলপুরের একটি ব্যাঙ্কের ভল্ট ভেঙে ৭৬ লক্ষ টাকা ডাকাতি করেছিল দুষ্কৃতীরা।