৪ বছর ধরে মারণরোগ ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছেন ৬০ ছুঁই ছুঁই কৃষ্ণা চক্রবর্তী। অদম্য মনের জোরে শুধু জীবন-জয়ের লড়াই চালাচ্ছেন না রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও তিনি েকেবারে সামনের সারিতে। এবারের পঞ্চায়েতে নির্বাচনে তিনি কালনার হাটকালনা পঞ্চায়েতে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বুধবার জমা দিয়েছেন মনোনয়নপত্রও।
কালনা ১ ব্লকের হাটকালনা পঞ্চায়েতের পুরাতনহাটের বাসিন্দা কৃষ্ণা। জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত কৃষ্ণার মুখে সিপিএমের চেনা শ্লোগান, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’। এই মন্ত্র রাজনীতির সঙ্গে তাঁর জীবনকেও জুড়ে দিয়েছে। আইসিডিএস কর্মী ৫৯ বছরের কৃষ্ণার সিপিএম যোগ ৩০ বছরের। স্বামী বিকাশ চক্রবর্তী দলের সর্বক্ষণের কর্মী। এর আগে কৃষ্ণা ২০১৩ সালে জেলা পরিষদের আসনে লড়েছিলেন।
২০১৮ সালেও লড়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। কিন্তু সেই সময় অশক্ত শরীরে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল তাঁকে। তার পর নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে ধরা পড়ে তাঁর জরায়ুর ক্যান্সার। তার পর থেকে ৪ বছর ধরে চলছে লড়াই। সেই লড়াইয়ে আর্থিক ও মানসিক ভাবে দলকে পাশে পেয়েছেন বলে জানান কৃষ্ণা। এবার তার কিছুটা দলকে তিনি ফিরিয়ে দিতে চান। তাই শরীরে মারণরোগ নিয়েও তীব্র গরম উপেক্ষা করে বিডিও অফিসে এসে মনোনয়নের কাজ সেরে ফেলেছেন।
দলই তাঁর ধ্যান-জ্ঞান বলে জানাচ্ছেন কৃষ্ণা। বলেন, ‘দলের ন্যায়, নীতি, আদর্শ ভালো লেগেছে বলেই দলটা করে যাচ্ছি। দলকে খুব ভালোবাসি। তাই রোগ-যন্ত্রণা দূরে সরিয়ে রেখে মানুষের পাশে থাকতে চাই। জনপ্রতিনিধি হলে মানুষের পাশে থাকতে পারব, তাই নির্বাচনে লড়ছি।’ কৃষ্ণা জানান, নিয়মিত ব্যবধানে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে ছুটে আসতে হয়।
চেক-আপের সময়টুকু বাদ দিয়ে বাকি সময় তিনি দলের জন্য ব্যয় করতে চান। প্রচারেও পুরোদমে থকাতে চান তিনি। ইচ্ছা রয়েছে, প্রতিটা বাড়িতে একবার করে যাওয়ার। সিপিএমের কালনা ১ এরিয়া কমিটির সদস্য তথা এবারের জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থী হওয়া হালিম শেখ বলেন, ‘দিদির শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে আমরা চাইনি, উনি নির্বাচনে লড়ুন। কিন্তু ওঁকে থামানো যায়নি। উনি আমাদের বলেছেন, আজীবন মানুষের পাশে থাকতে চান। ওঁর ইচ্ছাকে আমরা সম্মান দিয়েছি।’ কিন্তু কৃষ্ণা জানেন, তাঁর দুটো লড়াই-ই কঠিন। তবু যে হার মানতে শেখেননি সিপিএমের এই প্রার্থী। রাজনীতিতেও তিনি চান, জীবনের জয়গান গাইতে।