একটু ভালো থাকা, একটু সুখের খোঁজে বাইরে কাজে যাওয়া। কিন্তু সেই সুখের দিনের স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে গেল। আজও বাড়িতে ফেরা হয়নি চন্দনের। সে মৃত না জীবিত বিষয়টি খোঁজখবর নেওয়ার জন্য পরিবারের সদস্যরা শুধু ওড়িশা নয়, কলকাতার ও বিভিন্ন হাসপাতালেও ঘুরে বেড়িয়েছেন এই দুজনের খোঁজে। কিন্তু কোন জায়গাতেই কোন সদুত্তর মেলেনি, বরং তারা যে ট্রেনে ছিলেন তার প্রমাণ চেয়েছে রেল দফতর। সে বিষয়েও পরিবার অসহায় কারণ। এই দুজনের কোন রিজার্ভেশন টিকিট ছিল না, তারা জেনারেল কম্পার্টমেন্টের যাত্রী ছিলেন। পরিবারের কাছে এখন দুটি ভয়েস রেকর্ড যেমন ট্রেন ছাড়ার আগে চন্দন রায়ের এবং অ্যাক্সিডেন্টের পর স্থানীয় মানুষদের কাছ থেকে ফোনে যেটা জানতে পেরেছিলেন, সেই দুটি ভয়েস রেকর্ডই এখন সম্বল চন্দন রায়ের পরিবারের। অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে কেউ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। এমনকি চন্দন রায় ও তার আত্মীয় কোথায় রয়েছে সে বিষয়ে খোঁজখবর করতে গেলেও তাদের আর কোন পাত্তা দেওয়া হয় না। তবুও এখনও একটা খবরের আশায় বুক বেঁধে রয়েছে চন্দন রায়ের পরিবার। তাদের দাবি, অন্ততপক্ষে কোথায় রয়েছে, কিভাবে রয়েছে, ভালো অথবা খারাপ, যে কোন একটা সংবাদ তাদের দেওয়া হোক।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ২ তারিখে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার গাঁও গঙ্গারামপুর গ্রামের বাসিন্দা চন্দন রায় ও তার আত্মীয় মিত্যুন রায়। এরা পরিযায়ী শ্রমিকের কাজের জন্য যাচ্ছিলেন কেরালায়। ট্রেনে ওঠার আগে পরিবারকে তারা জানায়, ট্রেনের জেনারেল কম্পার্টমেন্টে ২২ নম্বর যাত্রী হিসেবে ট্রেনে ওঠার জন্য লাইন দিয়েছে। ট্রেনে ওঠার পরেও একবার ফোন করে চন্দন ও মিত্যুন পরিবারকে জানায়, মুখোমুখি দুটো সিট পেয়েছে তারা। এরপর আর যোগাযোগ করা যায়নি। তারপর থেকে নিজের অজান্তেই বারবার চন্দন রায়ের মোবাইলের ফোন নাম্বারে ডায়াল করে চলেছে সাবিত্রী রায় অর্থাৎ তার স্ত্রী কিন্তু বারবারই একই উত্তর আসছে ফোন সুইচ অফ। অসহায় এই পরিবার দাবি করছে, যাতে প্রশাসন তাদের সাহায্য করে। অন্ততপক্ষে কোথায় রয়েছে মিত্যুন ও চন্দন সেটুকু তাদের জানানো হোক। জীবিত না মৃত, এইটুকু তথ্যও না পেয়ে অধীর অপেক্ষায় রায় পরিবার।